রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় টানা খরা চলছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কাপ্তাই লেকে পানির স্তর দিন দিন কমে যাচ্ছে। লেকে পানি কম থাকায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে যাচ্ছে।
কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল একটি সুত্র থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী বর্তমানে মঙ্গলবার কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ৭৫.১২ ফুট মীন সী লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী হ্রদে এই মুহুর্তে (১৮ মে) পানি থাকার কথা ৭৯ ফুট এমএসএল। প্রয়োজনের তুলনায় কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে ৪ ফুট পানি কম রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাপ্তাই হ্রদের মৎস্যজীবীদের জন্য আরও ৪৩৯.১২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ
হ্রদের পানি কম থাকায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমিয়ে আনা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি জেনারেটরের মধ্যে ৪টি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সম্পুর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। ২ নম্বর জেনারেটরটি রক্ষনাবেক্ষনের কাজের জন্য বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে। ৪টি জেনারেটর প্রস্তুত থাকা সত্বেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে রয়েছে ১টি মাত্র জেনারেটর। এই জেনারেটর থেকে বর্তমানে ২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে লেকে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম থাকা সত্বেও ৩, ৪ ও ৫ নম্বর জেনারেটর চালানো সম্ভব হচ্ছেনা।
আরও পড়ুন: কাপ্তাই হ্রদে আগামী ৩ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা থাকা সত্বেও হ্রদের পানি কম থাকায় সব জেনারেটর সচল রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছেনা।
অচিরেই ভারি বৃষ্টি হবার আশা প্রকাশ করে ব্যবস্থাপক বলেন, বৃষ্টি হলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। তখন সব জেনারেটর চালু করা গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ানো সম্ভব হবে।
সুত্র জানায় কাপ্তাইয়ে মোট ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কাপ্তাই লেকে ৯০ ফুট এসএমএলের উপর পানি থাকলে এবং সবগুলো জেনারেটর একযোগে চালানো সম্ভব হলে এই কেন্দ্র থেকে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, কাপ্তাই থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ প্রতি ইউনিট মাত্র ২৫ পয়সা। বাংলাদেশে আর কোথাও এত কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়না বলেও সুত্র নিশ্চিত করেছে।