অভিবাসন খাতের সাংবাদিকতায় অবদান রাখায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১৬জন সাংবাদিক।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২) ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচি প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অভিবাসন খাতে সাংবাদিকতাকে স্বীকৃতি দিতে ২০১৫ সাল থেকে ব্র্যাক এ পুরষ্কারটি প্রবর্তন করে। এ বছর সপ্তমবারের মতো এই পুরস্কার দেয়া হলো।
বাংলাদেশের ডেনমার্ক দূতাবাসের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের অনুপ্রেরণা প্রকল্প থেকে এই পুরস্কার দেয়া হলো।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইমরান আহমদ তার বক্তব্যের শুরুতে দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অভিবাসীদের অধিকার রক্ষা ও সঠিক তথ্য প্রদানে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কজেই পক্ষপাতিত্ব ও নিজস্ব চিন্তার প্রভাব এড়িয়ে সংবাদ উপস্থাপন করতে হবে। সত্য যতো কঠোরই হোক তুলে ধরতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম এনডিসি বলেন, ১৩ বছরে ৭৮ লাখ লোক বিদেশে গেছে। ২১২ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। ইতিবাচক এসব বিষয়ও গণমাধ্যমে আসতে পারে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: চার সাংবাদিক পেলেন অ্যাকশন এইড ইয়াং জার্নালিস্ট মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড
সাংবাদিকদের পাশাপাশি যারা নৈতিকভাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থান করে সেইসব এজেন্সিকেও আগামীতে ফেয়ার মাইগ্রেশন অ্যাওয়ার্ড দেয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, দারিদ্র দূরীকরণে বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অভিবাসনের গুরুত্ব অনেক। এ কারণেই আমরা অভিবাসন খাতে দক্ষ লোক তৈরি, নিরাপদ অভিবাসন, মানবপাচার বন্ধ ও বিদেশফেরতদের পুনরেকত্রীকরণে কাজ করি।
এছাড়া প্রতি বছর মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের এই অনুষ্ঠানটি আমরা উৎসাহ নিয়ে আয়োজন করি যাতে সারাবছরের একটা চিত্র উঠে আসে।
তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলে পরিবর্তন সম্ভব।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ডেপুটি চীফ অব মিশন নুসরাত গাজ্জালি, আইএলও এর চীফ টেকনিকাল এডভাইজার ল্যাটেশিয়া ওয়েবল, জুরি বোর্ডের সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব এ বি এম আবদুল হালিম ও বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এ বছরের ১৪ জানুয়ারি গণমাধ্যম ও ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে সপ্তম ব্র্যাক মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এ বছর জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এ.বি.এম আবদুল হালিম, আইএলও এর শেখ মোহাম্মদ রেফাত আলী এবং নিউজ২৪ টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নি।
এ বছর সংবাদপত্র জাতীয় বিভাগে দৈনিক সমকালের রাজিব আহাম্মদ প্রথম স্থান অধিকার করেন।
প্রথম আলোর মানসুরা হোসাইন দ্বিতীয় এবং দি ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের আরাফাত আরা ও আজকের প্রত্রিকার মো. শাহরিয়ার হাসান (দৈনিক বাংলায় বর্তমানে কর্মরত) যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।
সংবাদপত্র আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে প্রথম হন দৈনিক চট্টগ্রাম খবরের ফারুক মুনীর, একুশে পত্রিকার শরীফুল ইসলাম দ্বিতীয় এবং সাপ্তাহিক চৌদ্দগ্রাম পত্রিকার মো. এমদাদ উল্যাহ তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।
টেলিভিশন নিউজ বিভাগে ডিবিসি নিউজের সাবিনা ইয়াসমিন, (বর্তমানে ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে কর্মরত) প্রথম স্থান অধিকার করেন। সময় টেলিভিশনের মারজিয়া মম দ্বিতীয় এবং নিউজ২৪ এর মাসুদা খাতুন তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। টেলিভিশন প্রোগ্রাম ক্যাটাগরিতে চ্যানেল২৪ এর মোরশেদ হাসিব হাসান পুরস্কার লাভ করেন।
রেডিও বিভাগে পুরষ্কার লাভ করেন বাংলাদেশ বেতারের মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
অনলাইন সংবাদপত্র বিভাগে প্রথম পুরষ্কারটি জিতেছেন জাগোনিউজ২৪ অনলাইনের মো. জাহাঙ্গীর আলম। দ্বিতীয় হন দৈনিক প্রথম আলোর মো. মহিউদ্দিন এবং যুগ্মভাবে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক বাংলার জেসমিন আকতার ও প্রবাসী ফ্রিল্যান্সার রাকিব হাসান।
প্রত্যেক বিজয়ী পুরষ্কার হিসেবে একটি ক্রেস্ট, স্বীকৃতির সনদ এবং পুরষ্কারের অর্থমূল্যের চেক গ্রহন করেন।
আরও পড়ুন: বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ইউএনবির প্রতিনিধি মো. আরজু