ভাষা শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। কোন অবস্থাতেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিলুপ্ত হতে দেয়া যাবে না।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এফডিসিতে ‘একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, একুশের চেতনায় উজ্জিবীত হয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার ৫০ বছরে অনেক অর্জন থাকলেও কোন কোন ক্ষেত্রে তার বিচ্যুতি ঘটেছে। দুর্নীতির কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। তাই সরকার দুর্নীতি দমনসহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করছে।
তিনি বলেন, সংখ্যা যতো কমই হোক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। শিক্ষা কোন দয়া বা দান নয় বরং অধিকার। তাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার সচেষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
কে এম খালিদ বলেন, এবারের বইমেলায় উগ্র জঙ্গীবাদী হামলার তেমন কোন শঙ্কা নেই। তবুও নিরাপত্তার ঝুঁকি বিবেচনায় বইমেলায় সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রকাশকদের ক্ষতি বিবেচনা করে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে বইমেলার মেয়াদ বাড়ানো হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে মাতৃভাষার জন্য জীবন দিতে হয়েছে। সারা বিশ্বে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশে অবস্থিত ৪১টি জাতিগোষ্ঠীর ভাষাকেও সমানভাবে এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার প্রতিবছরের শুরুতেই প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়। কিন্তু বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য যে ভাষাগুলো রয়েছে তাদের শিক্ষার্থীদের হাতে কি আমরা নিজস্ব ভাষায় বই তুলে দিতে পারছি? ২০১৬ সালে সরকার গারো, উরাও, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা এই পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ভাষায় বই প্রকাশ করেছে। কিন্তু এই পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নিজস্ব ভাষায় রচিত বই পড়ানোর জন্য এখনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ১৪টি ভাষা আজ বিপন্ন হতে যাচ্ছে। এই বিপন্ন ভাষাগুলো হচ্ছে খাড়িয়া, কোডা, মুন্ডারি, কোল, মালতো, খুমি, লুসাই, পাংখোয়া, চাক, খিয়াং, পাত্র, সৌরা, রেংমিটচা।