রবিবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাসে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য করণীয় বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ের এই সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ইমরান আহমদ বলেন, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সরকার খাদ্য, চিকিৎসাসহ সামগ্রিক সুরক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এজন্য দূতাবাসগুলোর চাহিদা অনুসারে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে মানবিক বিবেচনায় কয়েকটি দেশ থেকে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে বিপদগ্রস্থ বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে কুয়েত থেকে ৩১৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হবে এবং কুয়েতের সেই ফিরতি ফ্লাইটে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়াও ইপিএসের আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত ১৫০ জন কর্মী এবং সেখানে অধ্যয়নরত ২৬ জন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে কোরিয়ায় পাঠানো হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যেসব বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে অথবা আকামার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ভিসা/আকামার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোনো কর্মী বিদেশে চাকরিচ্যুত হলে অথবা নিয়োগকারী কোম্পানি যদি কর্মী ছাটাই করে সেক্ষেত্রে তাদেরকে দেশে না পাঠিয়ে সেদেশের অন্য কোনো কোম্পানিতে নিয়োগের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ স্বাক্ষরে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য অর্থ ঋণ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
‘বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের নিমিত্ত সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হবে। ইতোমধ্যে যারা ছুটিতে দেশে এসেছেন এবং যাদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে, তারা যাতে পুনরায় যেতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে,’ মন্ত্রী যোগ করেন।
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের যাচাই-বাছাই করে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে। তবে তাদের মধ্যে কেউ যদি গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকে তাহলে তাদের ব্যাপারে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। দেশে ফেরত আনা প্রবাসীকে বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, প্রবাসীরা দেশের সম্পদ। এই দুঃসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মানবিক দায়িত্ব।
‘বিভিন্ন দেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হচ্ছে। এর ফলে সেসব দেশের সাথে বাংলাদেশের শ্রম কূটনৈতিক সম্পর্ক সুসংহত হবে এবং কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রাধান্য পাবে,’ তিনি যোগ করেন।