মিয়ানমারকে অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের চাপ দিলে প্রত্যাবাসন সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে অর্থনৈতিকসহ নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করলে প্রত্যাবাসন সফল হবে।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচার মামলায় সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর এপিএস’র জামিন মঞ্জুর
বুধবার (২৪ মে) মন্ত্রণালয়ে তার সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার এবং অতি দারিদ্র বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি অলিভার ডি স্কাটার এর সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাতের সময় মন্ত্রী জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধিকে রোহিঙ্গা ইস্যু সহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেন।
প্রতিবছর পনেরো হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শিশু বাংলাদেশে জন্ম নিচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একার নয়, প্রত্যাবাসন সফল না হলে তা বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হবে।
অলিভার ডি স্কাটার বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, দারিদ্র হ্রাসসহ অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
এছাড়া তিনি বলেন, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের আরও বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
এসময় মো. তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা আছে এবং তারা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে স্থানীয় মানুষের শাসন নিশ্চিত করেছে। সবার জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান এলজিআরডি মন্ত্রীর
তিনি আরও বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন ও ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর অনেক দেশের জন্য অনুকরণীয়।এ সক্ষমতা অর্জনে সমাজের নানা স্তরের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার এবং অতি দারিদ্র বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি অলিভার ডি স্কাটারকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, ১৯৯৬ সালে বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে বর্তমানে আমাদের অতি দারিদ্র্যের হার ৫ শতাংশ এবং দারিদ্র সীমারেখার নিচে বসবাসরত জনসংখ্যা ১৮ শতাংশ।
তিনি বলেন, এক সময় আমাদের জিডিপির আকার ছিল মাত্র ৩৭ বিলিয়ন ডলার আর এখন আমাদের জিডিপির আকার ৪৪০ বিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার একটি দলিল। সারাদেশে সুষম উন্নয়নের জন্য সরকার চেষ্টা করছে কিন্তু অর্থনৈতিক নানা অনুষঙ্গ মাথায় রেখে আমাদেরকে প্রজেক্ট নিতে হয়।
সময়ের সঙ্গে সারাদেশের জনগণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল সমানভাবে পাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের পথে কিছু অসংগতি থাকলেও ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ এবং দক্ষ শ্রমিক আছে উল্লেখ করে বিভিন্ন অর্থনৈতিক জোনে বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান মো. তাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণাবলী এবং দৃঢ়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ছাড়া বাংলাদেশের এই অগ্রগতি অর্জন কখনো সম্ভব হতো না।
জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মকর্তা মিস সাকসী রাই এবং পরামর্শক পল ডরনান।
আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভাপতি পদ থেকে অপসারণ