সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফেরেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে। কক্সবাজারের বিচারিক আদালত থেকে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় এটি পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মুহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে, ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সকল নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিরা যদি আপিল করে থাকেন তা একসেঙ্গে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: প্রদীপ ও লিয়াকত এখন চট্টগ্রাম কারাগারে
এর আগে ৩১ জানুয়ারি বিকালে সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এছাড়া ছয় আসামি সাবেক এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাগর দেব, রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এছাড়া এপিবিএনের এসআই শাহজাহান আলী, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, লিটন মিয়া ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে খালাস দেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে যাবে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
রায়ে সন্তুষ্ট নই, তবে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে: মেজর সিনহার বোন
এ ঘটনার পাঁচদিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২য় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডেকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।