বৃহস্পতিবার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর আলামত সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাওয়া রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ডিএনএ টেস্ট ছাড়া অভিযুক্তকারী কারা তা বলা যাচ্ছে না। সিআইডির মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করাতে হয়। ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া গেলেই জানা যাবে ধর্ষণে এক নাকি একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
তিনি আরও বলেন, ‘সিআইডির পক্ষ থেকে আমাদের আলামত প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।’
এ দিকে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার লক্ষণপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল কাদের (৪০) একই গ্রামের আব্দুল মাজেদের ছেলে আব্দুল লতিফ (৫০) ও ভুক্তভোগী গৃহবধূর চাচাতো দেবর চটকাপোতা গ্রামের মো. কামরুজ্জামান ওরফে কামরুলকে (৪০) পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শার্শা উপজেলার দুই সন্তানের জননী ওই গৃহবধূর বাড়িতে সোমবার রাতে গিয়ে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন গোড়পাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুল ও তার সোর্স কামরুল, লতিফ ও কাদের। টাকা দিলে তার স্বামীর বিরুদ্ধে করা ৫৪ ধারায় মামলায় তার জামিনের সহায়তা করবেন বলে জানান তারা। ফেনসিডিল মামলায় জেলহাজতে থাকা তার স্বামীকে কীভাবে ৫৪ ধারায় মামলা দেখিয়ে জামিনের সহায়তা করবেন বলে এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন । এরপর তিনি ও কামরুল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। মঙ্গলবার সকালে ওই নারী যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় জেলা পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে ঘটনা তদন্তে ৩ সেপ্টেম্বর এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন শিকদারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও এ তদন্ত কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। ধর্ষণের এই ঘটনায় ওই গৃহবধূ মঙ্গলবার রাতে শার্শা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। মামলায় গোড়পাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই খায়রুলের নাম বাদ দেয়া হয়। তবে শার্শার চটকাপোতা গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল, লক্ষণপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ ও আব্দুল কাদেরের নাম উল্লেখ ও একজনকে অজ্ঞাত করে আসামি করা হয়। পুলিশ সেই রাতেই তাদের তিন জনকে আটকের পর আদালতে সোপর্দ করে। অবশ্য এসআই খায়রুলকে তদন্তের স্বার্থে সেখান থেকে প্রত্যাহার করে যশোর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।