তবে যদি কোনো আদালত রায়ে ‘আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ উল্লেখ করে তাহলে আদালতের ওই রায় অনুযায়ী সাজা কার্যকর হবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ এক রিভিউ পিটিশন নিষ্পত্তি করে এ রায় ঘোষণা করে।
বেঞ্চ বলেছে, ‘২০১৭ সালের ফৌজদারি রিভিউ পিটিশন নং ৮২ অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে-‘প্রাথমিক অর্থে যাবজ্জীবন কারাবাস মানে কোনো দণ্ডিতের স্বাভাবিক জীবনের বাকি পুরো জীবন’ এই সংক্ষিপ্ত আদেশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
‘যাবজ্জীবন সাজা তখনই ৩০ বছর বলে গণ্য হবে যখন ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৫-এ এবং দণ্ডবিধির ৪৫ ও ৫৩ এবং ৫৫ ও ৫৭ ধারা একসাথে পড়া হবে।’
‘তবে আদালত, ট্রাইব্যুনাল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কাউকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ অনুযায়ী আমৃত্যু কারাদণ্ড দিলে সেই দণ্ডিত ব্যক্তি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫-এ ধারার সুবিধা পাবেন না।’
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজার অর্থ হবে ৩০ বছর কারাদণ্ড। তবে কোনো নির্দিষ্ট আদালত বা ট্রাইব্যুনাল যদি কোনো ব্যক্তিকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি আদেশ থেকে কোনো সুবিধা পাবে না।
গত ২৪ নভেম্বর যাবজ্জীবন সাজা নিয়ে পুনর্বিবেচনার আবেদনটির পুনঃশুনানি শেষে ১ ডিসেম্বর রায়ের জন্য দিন ধার্য করে আপিল বিভাগ। ১১ জুলাই পুনর্বিবেচনার আবেদনটির ওপর শুনানি শেষে তা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিল আপিল বিভাগ।
পাশাপাশি সিনিয়র আইনজীবী রোকনুদ্দিন মাহমুদ, এএফ হাসান আরিফ, আব্দুর রাজ্জাক এবং এএম আমিন উদ্দিন এ বিষয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন। কারণ তাদের অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই ভাই- আতাউর মৃধা ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট ওই আদেশ বহাল রাখে।
হইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধ আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে দুই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেয়া হয়। এই সাথে আপিল বিভাগ যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ ৭ দফা অভিমত দেয়।