প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল নানা গুজব ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তবে জনগণের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘আজকে কিছু কথা নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে এবং এসব কাজ আরও অনেক দিন চলবে। অনেক মানুষ এতে বিভ্রান্ত হতে পারে। আমি বলতে চাই বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।’
সোমবার মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২২ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২২-এর গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হচ্ছে যখনই দেশ একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়, তখন সকলের কাছে (স্বার্থান্বেষী মহল) এটা পছন্দ হয়না।
যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, তার সরকার এখনো বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চার ভাগের এক ভাগ মানুষ বিভিন্ন কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে এবং মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়াচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কোভিড-১৯ সময়কালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের অর্থ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, টেস্টিং কিট, খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য সংগ্রহে ব্যয় করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য সবসময়ই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত রেখে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখব। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না।’
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করেছিলেন, যেখানে তিনি বলেছেন সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে গড়তে কমিশনপ্রাপ্তদের '২০৪১ সালের সৈনিক' হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কারণ, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। যুদ্ধের পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। যদি কোন সমস্যা হয়, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি প্রতিবেশিদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্রসীমা বিরোধের সমাধান এবং আলোচনার মাধ্যমে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের ওপর জোর দেন। ‘যদি না আমরা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে না পারি, আমরা আমাদের স্বাধীনতা এবং এর চেতনাকে ধরে রাখতে পারব না। সুতরাং, আমরা লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার সরকারের বিশেষ মনোযোগের কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
তিনি একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা বহাল রাখার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনী যে কোনো দুর্যোগে সর্বদা জনগণের পাশে থাকে। তারা দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশের ভূখন্ডে শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে তাদের ভূমিকা পালনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ জাতিসংঘের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি নতুন এনডিসি ও এএফডব্লিউসি গ্র্যাজুয়েটদের তাদের নিজ নিজ কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: চলমান অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করুন: সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী