রমজান মাসে মূল্যবৃদ্ধি রোধে পণ্য মজুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাজার মনিটরিং জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)।
এছাড়া ইফতার ও সেহরির সময় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি রোজার মাসে যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয় তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রমজানের আগে পিএমওতে অনুষ্ঠিত একটি সভা থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্টক, সরবরাহ ও মূল্য, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং আসন্ন ঈদুল ফিতরে মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে এই নির্দেশনা এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মুসলিম দেশগুলো অভিন্ন মুদ্রা চালুর পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
মুখ্য সচিব বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবারের রমজানে খাদ্যশস্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ বেশি।
তিনি বলেন, ‘বাজারে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস রয়েছে। রোজার মাস সামনে রেখে আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছি। জনগণ তাদের চাহিদামতো পণ্য কিনতে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা রমজান ও ঈদ খুব ভালোভাবে উদযাপন করতে পারব।’
তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ থাকলে আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু এ বছর এখন আমাদের কাছে প্রায় ১৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।
এছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে চিনি, পেঁয়াজ এবং ভোজ্য তেলের স্টক আছে কি না পর্যালোচনা করা হয়েছে। ‘বাজারে পর্যাপ্ত চিনি পাওয়া যাচ্ছে এবং আরও চিনি আমদানি করা হচ্ছে, তাই আমরা সম্ভাব্য চিনি সংকট নিয়ে চিন্তিত নই। বাজারে ভোজ্য তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। সুতরাং, ভোজ্য তেল নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যাতে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে সেজন্য পণ্যের সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্য সচিব।
সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অংশ হিসেবে রমজানে কিস্তিতে ওএমএস ও টিসিবির মাধ্যমে দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা রোজার মাসে এক কোটি মানুষকে দ্বিগুণ ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর দেব।’
পর্যালোচনা সভায় পরিবহন টিকিট ব্যবস্থা সহজীকরণ, ঈদের সময় মহাসড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা, ঈদের আগে সড়ক ও সেতু সংস্কার, ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধ, আকাশপথে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বৃদ্ধি এবং যথাযথ অর্থ বিতরণের বিষয়ে আলোচনা হয়। ঈদকে সামনে রেখে গার্মেন্টস ও জুটমিল শ্রমিকদের মধ্যে বেতন নিয়ে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), সেতু বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।