রাজধানীর আদাবরের একটি বাসা থেকে দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ তিন বোন নিখোঁজ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। এদিন দুপুরে ওই তিন বোনের খালা সাজিয়া নওরীন আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডি তদন্তকারী অফিসার আদাবর থানা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মোমিন বলেন, থানায় জিডি করার পর পুলিশ শেকেরটেক পিসিকালচার রোডের ওই বাসায় গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করেছে। ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সকাল ১১টা ৪মিনিটে প্রথমে ছোট বোন, এরপর মেজ বোন এবং সব শেষে বড় বোন ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হয়ে গেছে। আমরা তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ করছি। এখনও তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারিনি, চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইউএনবি কে জানান যতটুকু জানতে পেরেছি নিখোঁজ তিন বোন মোবাইল ফোন ব্যবহার করত না। এ কারণে আমরা তাদের সর্বশেষ অবস্থান ট্রেকিং করতে পারছিনা। তবে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করছি।
নিখোঁজ তিন বোনের খালা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার বড় বোন ২০১৩ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বোনের পর পর তিনটি মেয়ে হওয়ায় দুলাইভাই আগেই অন্য এক জনকে বিয়ে করেছিলেন। বোন মারা যাওয়ার পর তার সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই। তিন বোন আমার কাছে এবং আমার ছোট বোনের কাছেই থাকত। আদাবর ও খিলগাঁওয়ের দুই বাসায় থেকে তারা পড়ালেখা করত।
আরও পড়ুন: কালকিনির পালরদি নদী থেকে নিখোঁজ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার
তিন বোনের মধ্যে বড়টি গত বছর এসএসসি পাস করেছে। আর ছোট দুই বোন পিঠাপিঠি, ওরা দুই জনেই এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল।
তিনি আরও জানান, গত ১৫ নভেম্বর আদাবরের বাসা থেকে দুই বোন প্রথম পরীক্ষায় অংশ নেয়। আগামী ২২ নভেম্বর তাদের পরবর্তী পরীক্ষা আছে। কিন্তু তার আগেই কাউকে না বলেই তারা বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে।
ওই তিন বোনের খালা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তাদের বাসায় রেখে মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে যাই। রাস্তায় হঠাৎ মনে পড়ে, একটি ফাইল ছেড়ে এসেছি। মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফিরে দেখি, দরজায় তালা লাগানো। সামনে থাকা ঝুড়িতে চাবি রাখা। এরপর দরজা খুলে দেখি তিন বোনের কেউই নেই।
তিনি বলেন, করোনাকালে ঘরবন্দি থাকায় তিন বোন টিকটক করত। বোধহয় টিকটকে আসক্ত হয়ে পড়েছিল। এর মাধ্যমেই কারও প্ররোচণায় তারা বাসা থেকে বের হয়ে যেতে পারে। যাওয়ার সময় তারা বই-খাতা, পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ সবকিছু নিয়ে গেছে। পরে দুপুরে গিয়ে ঘটনা খুলে বলে আদাবর থানায় একটি জিডি করেছি।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ৭দিন পর বাজারের ব্যাগ থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার