র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জনগণ গ্রহণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যুক্তরাষ্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি জে. ব্লিঙ্কেনের কাছে তুলে ধরেছি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তার সাম্প্রতিক টেলিফোন আলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের বাংলাদেশে চলমান তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বিষয়ে তাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
মুখপাত্র আরও বলেন, দুই নেতা মানবাধিকারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করতে ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এক সাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: র্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, রক্ষা করে: মুখপাত্র
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছি, ‘আমরা বেশ কয়েকটি সংলাপের মাধ্যমে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আমরা আমাদের প্রতিবেশিদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করেছি। স্বাভাবিকভাবেই, আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি আগেই আমাদের জানাবেন। আমরা এটা পছন্দ করিনি।’
ড. মোমেন র্যাবকে ‘দুর্নীতিমুক্ত অত্যন্ত সুশৃঙ্খল বাহিনী’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, র্যাব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করছে যেমনটা যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস, মানবপাচার, অপরাধ ও মাদকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, র্যাবের দক্ষতার কারণে হলি আর্টিজানের ঘটনার পর বাংলাদেশে কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি।
র্যাবের ওপর মানুষের অনেক আস্থা আছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, কোনো পক্ষই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে কথা বলেনি, কিন্তু আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন।
মোমেন বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা আলোচনা করবেন এবং মানবাধিকার, গণতন্ত্র, শান্তিরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অনেক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি তাকে বলেছি যে আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানবাধিকারের সমস্যা সমাধানে দেশ অনেক গুরুত্ব দেয়।
মোমেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে অনেক চলমান সংলাপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং আগামীতে ওয়াশিংটনে একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আইজিপিসহ র্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা