আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বদ্ধমূল সমস্যা এবং এর প্রভাব অনেক বেশি বিস্তৃত।
তিনি বলেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবার, সম্প্রদায় ও সামগ্রিকভাবে জাতিকে প্রভাবিত করে।
তিনি আরও বলেন, এ সহিংসতা কেবল শারীরিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে পারিবারিক কাঠামোকে ব্যাহত করে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তরে ক্ষতিগ্রস্তদের অগ্রগতিতে বাধা দেয়।
আরও পড়ুন: অবাস্তব প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নয়: আইনমন্ত্রী
শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স বেঞ্চ বুক লঞ্চ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচার বিভাগ ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা এবং প্রশমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদালত এ ধরনের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে; যাতে তারা প্রতিকার পায় এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে পারে।
তিনি বলেন, এমন প্রেক্ষাপটে, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাবিষয়ক মামলার জটিল বিষয়গুলোর সহজ সমাধানে বিচার বিভাগীয় বেঞ্চ বুক দুটি বিচারকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সব স্তরের মানুষের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সমাজের দুর্বল ও অসহায় মানুষদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক পরিসরে আইনি, প্রশাসনিক ও নীতিগত সংস্কার করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে সুদৃষ্টি দিয়েই তার সরকার ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে।
২০১২ সালে পর্নোগ্রাফি (নিয়ন্ত্রণ) আইন ও মানব পাচার প্রতিরোধ আইন করেছেন। এ আইনগুলো সহিংসতা ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, নারী ও শিশুরা মানব পাচারের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এ ঘৃণ্য অপরাধ দমনে কৌশলগতভাবে সাতটি বিভাগীয় সদরে সাতটি মানব পাচার বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী ১০১টি বিশেষায়িত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উল্লেখযোগ্য নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে।
এছাড়া এ দূরদর্শী পদক্ষেপগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ হিসেবে করেছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার: আইনমন্ত্রী