এবারের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে উপসচিব শওকত আলীর অনুবাদ গ্রন্থ ‘থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ’।
পুঁথি নিলয় প্রকাশিত অনুবাদ গ্রন্থটি প্রকাশনীর নিজস্ব স্টলেই পাওয়া যাচ্ছে। গ্রন্থটি এবারের মেলায় এখন পর্যন্ত প্রকাশিত একমাত্র অনুবাদ গ্রন্থ।
খ্যাতিমান আমেরিকান লেখক নেপোলিয়ন হিল (১৮৮৩-১৯৭০) রচিত ‘থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ’ (Think and Grow Rich) বিশ্বব্যাপী বহুল পঠিত একটি অনন্যসাধারণ আত্মোন্নয়নমূলক গ্রন্থ। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম প্রকাশের পর অদ্যাবধি বইটির দেড় কোটিরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। আত্মেন্নয়নমূলক সর্বোচ্চ বিক্রীত ১০টি বইয়ের মধ্যে এটি অন্যতম।
আরও পড়ুন: অবশেষে বইমেলা শুরু
নেপোলিয়ন হিল দীর্ঘ পঁচিশ বছর নানান পেশা ও শ্রেণির মানুষকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বইটি লিখেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল পাঁচ শতাধিক আমেরিকান নাগরিকের চরিত্র বিশ্লেষণ করে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, এরা তাদের জীবনে ১৩টি নীতি (দর্শন) একাগ্র দৃঢ়তায় সর্বত্র প্রয়োগ করেছেন। এগুলো হলো: জীবনে উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ, নিজের যোগ্যতার উপর বিশ্বাস, অটোসাজেশনের মাধ্যমে মনের মধ্যে প্রত্যয় তৈরি, বিশেষায়িত জ্ঞানার্জন, কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগানো, সুসংগঠিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, দীর্ঘসূত্রতা পরিহার, বুদ্ধিদাতা (মাস্টার মাইন্ড) দল গঠন, যৌন শক্তিকে গঠনমূলক কাজে রূপান্তর, অবচেতন মনকে নিয়ন্ত্রণ, মস্তিষ্কের অসীম ক্ষমতাকে কাজে লাগানো ও ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে প্রয়োগ করা।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ২ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২৫ হাজারেরও বেশি ব্যর্থ নর-নারীকে লেখক বিশ্লেষণ করে দেখতে পান যে, তাদের অধিকাংশের মধ্যে এই সকল গুণ ছিল না। জীবনে সাফল্য লাভের জন্য নেপোলিয়ন হিল এসব গুণ অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এজন্য তিনি বেশ কিছু অনুশীলনমূলক কার্যক্রমের প্রস্তাব করেছেন। তাছাড়া, সাফল্য লাভের উদ্দেশ্যে তিনি ছয়টি ভয়, যথা- দারিদ্র্যের ভয়, সমালোচনার ভয়, অসুস্থতার ভয়, বিশেষ কোনো ব্যক্তির ভালোবাসা হারানোর ভয়, বার্ধক্যের ভয় ও মৃত্যু ভয়কে জয় করার পরামর্শ দিয়েছেন।
অনুবাদের ব্যাপারে শওকত বলেন, ভাষান্তর সহজ কাজ নয়। এক ভাষার কথাকে অন্য ভাষায় রূপান্তর অনেকটা হরবোলার মতো জটিল। তবু, সর্বস্তরের পাঠকের কথা বিবেচনা করে সহজ ভাষায় মূল গ্রন্থের অনুরূপ দ্যোতনা অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রখ্যাত লেখক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আমীনের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, যিনি এ অনুবাদ গ্রন্থটি প্রকাশের ক্ষেত্রে আমাকে অকৃত্রিম সহায়তা প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন: বই বনাম কিন্ডল: আপনার জন্য কোনটি সেরা?
অনুবাদক মো. শওকত আলী নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন সরকারি চাকরিজীবী। বর্তমানে তিনি উপসচিব হিসেবে প্রজাতন্ত্রের কর্মে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাজ্যের টিসসাইড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্লোবাল ডেভেলাপমেন্ট এন্ড সোশ্যাল রিসার্স বিষয়ে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অনুবাদ করে সুনাম অর্জন করেন।