দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করা হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নষ্ট করার চেষ্টা করছে তারা অবশ্যই বাংলাদেশ ও মাতৃভূমির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দেখাচ্ছে না। সরকার কোন ক্ষুদ্রগোষ্ঠীরও বক্তব্য দিতে বাধা দেবে না কিন্তু জনগণের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করা হলে, আইন অমান্য করে ভাঙচুর ও আক্রমণ চালানো হলে সরকার সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
রবিবার রাজধানীর গ্রিনরোডে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) আয়োজিত ইপিজেডের শ্রমিকদের জন্য বেপজার হেল্পলাইন সেবা উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ‘নতুন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ’। ভৌগোলিক অবস্থান, সহজলভ্য, উৎপাদনশীল ও সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য সম্ভাবনাময় শ্রমশক্তি এবং পরিমিত উৎপাদন ব্যয়ে এশিয়া এমনকি বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগের প্রধান আকর্ষনীয় ক্ষেত্র।’
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অধিক পরিমাণে বিনিয়োগ অর্জনের জন্য শ্রম ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বর্তমান সরকার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন। বিশেষ করে, শ্রমিক ভাই-বোন যারা বাংলাদেশের বিনিয়োগের মূল চালিকাশক্তি, বর্তমান সরকার তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রমজীবীদের অধিকার রক্ষায় আইএলও’র সহযোগিতা কামনা আইনমন্ত্রীর
তিনি বলেন, এটা খুবই প্রশংসনীয় যে বেপজা সব সময় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে প্রাধান্য দেয়। ইপিজেডগুলোতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক যেমন শ্রমিক-মালিক-ব্যবস্থাপনা ঐকতানই এর প্রমাণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছরে ইপিজেডে ও ইপিজেডের বাইরের শ্রমিকদের বেতন তিন বার বৃদ্ধি করেছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘ইপিজেডের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসারে সরকার একটি পূর্ণাঙ্গ ও পৃথক ‘বাংলাদেশ ইপিজেডশ্রম আইন ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশেরবিভিন্ন অঞ্চলে ইপিজেড স্থাপন করা হয়েছে। ইপিজেডের কর্মীদের জন্য বেপজার হেল্পলাইন সেবা চালু একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ ইপিজেডের শ্রমিকদের পক্ষে খুব সহায়ক হবে এবং অভিযোগ মোকাবিলার মাধ্যমে সহজতর কর্ম পরিবেশ বজায় রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বের সাথে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশের গর্ব হিসাবে বেপজা তার বিকাশ অব্যাহত রাখবে এবং সুষ্ঠ ও সুন্দর কর্মক্ষেত্র বজায় রাখবে যা এসডিজির সাথে সঙ্গতি রেখে শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বাড়িয়ে তুলবে।
এর আগে মন্ত্রী বেপজা হেল্পলাইন ফোন নম্বর ১৬১২৮ উদ্বোধন করেন এবং এতে ফোন করে প্রাপ্য সুবিধাদি সম্পর্কে জানতে চান।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো.নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনু্ল কবির, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের অ্যাম্বাসেডর, বাংলাদেশে নিযুক্ত আইএলও’র কান্ট্রি ডাইরেক্টর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন কিছুদিনের মধ্যে: আইনমন্ত্রী