দেশের শ্রম খাত নিয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধিদল আগামীকাল রবিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
এই সফর সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
তারা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও সরকারের শ্রম, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ইউএনবিকে বলেছেন, শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘সামগ্রিক মূল্যায়নের’ লক্ষ্যে এই সফর।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি, প্রতিনিধি দলের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে ব্রাসেলস থেকে ঢাকায় আসবেন।
বাংলাদেশ শ্রম খাতে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) গ্রহণ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকার আইএলও গভর্নিং বডিতে জমা দেওয়া রোডম্যাপের সঙ্গে পরিকল্পনাটি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
এই রোডম্যাপের লক্ষ্য হলো সংগঠনের স্বাধীনতা ও সম্মিলিত দর কষাকষির অধিকারসহ দেশের শ্রম অধিকারের মান উন্নত করা।
গত মাসে রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেছিলেন, বাংলাদেশের জিএসপি+ আবেদন বিবেচনা করার ক্ষেত্রে শ্রম আইনকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার বিষয়টি ইউরোপীয় সংসদ ও কমিশনের জন্য একটি ‘বিবেচ্য উপাদান’।
ঢাকায় এক সেমিনারে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কাছে জিএসপি+ এ যোগদান করার বিকল্প রয়েছে, যা এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)-এরপর পরবর্তী সবচেয়ে উদার জিএসপি প্রোগ্রাম।’
আরও পড়ুন: শ্রম খাতের অগ্রগতি পর্যালোচনা: আগামী সপ্তাহে আসছে পাওলা পাম্পালোনির নেতৃত্বে ইইউ প্রতিনিধি দল
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কয়েক মাস আগে ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসে (ইইএএস) পাওলা পাম্পালোনির সঙ্গে দেখা করে।
তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করা, এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ), শ্রমিক কল্যাণ ও অধিকার এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রতিনিধি দল পাওলা পাম্পালোনিকে অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্তাকর্ষক অর্জন এবং প্রধান আর্থ-সামাজিক খাতসমূহের ব্যাপক অগ্রগতির বিষয়ে জানাবেন। যেখানে শিল্প খাত; বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ শ্রম আইনের চলমান সংশোধনীগুলো ঘনিষ্ঠভাবে লক্ষ্য করছি। আমরা আশা করি ত্রিপক্ষীয় অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে এবং আইএলওর প্রযুক্তিগত সহায়তায় সংশোধনীগুলো সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্যকর হবে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ একটি উদীয়মান অর্থনীতি, যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির একটি দুর্দান্ত গল্প রয়েছে।
তিনি বলেন, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়া ঐতিহাসিক মাইলফলক, যা নতুন সুযোগ নিয়ে সৃষ্টি করেছে এবং ইইউ-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানায়।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করায় উদ্বিগ্ন ইইউ
ঢাকায় প্রাণহানি-সহিংসতায় ইইউ ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শোক প্রকাশ