সেই সাথে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষ ও সেক্যুলার দেশ হিসেবে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান রয়েছে তা থেকে যেকোনো পদস্খলন তাদের দুর্বল করে দেবে।
‘আমাদের দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অত্যন্ত উঁচু। অন্য ধর্মের কেউ এখানে নিপীড়িত নয়। সব ধর্মের জন্য আমাদের সম্মান আছে। আমরা তাদের (সংখ্যালঘু) সমান দৃষ্টিতে এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দেখি,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত নাউকি ইতোর সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাওয়ায় অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসছেন।
সোমবার গভীর রাতে ভারতের লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৯ পাস হয়। ৩১১-৮০ ব্যবধানে বিলটি পাস করিয়ে নেয় নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিলটি এখন রাজ্যসভায় পাস হলে কার্যকর হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন যে এ বিলের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের’ আশ্রয় দেয়া।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ড. মোমেন বলেন, ভারতীয় বিল নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার দেশের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন। তারা ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। ‘তারা এ বিষয়ে সমালোচনামুখর। তারা মনে করে যে ভারত এটি করে (বিল পাস) তাদের অবস্থান দুর্বল করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার কাউকে তার ধর্মের ভিত্তিতে বিচার করে না। বরং তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দেখে।
‘এটা সত্য নয় যে সংখ্যালঘুদের এখানে নির্যাতন করা হচ্ছে। যারা তাদের এ তথ্য দিয়েছে, তা সত্যি নয়,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক এখন সোনালি অধ্যায়ের মাঝ দিয়ে যাচ্ছে।
ড. মোমেন জানান, সব ধর্মের অনুসারীদের চাকরিসহ সবখানে একই অধিকার পাওয়া নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
‘আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অন্য ধর্মের ব্যক্তিরা নেন। আমরা কাউকে কখনো তাদের ধর্ম দিয়ে বিচার করি না। আমরা সবাইকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিচার করি,’ বলেন তিনি।
এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, ভারতের বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে ‘ভুল দিকে বিপজ্জনক বাঁক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত মার্কিন কমিশন। যদি সংসদের উভয় কক্ষেই এ বিল পাস হয়ে যায় তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অন্য শীর্ষ ভারতীয় নেতাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ চেয়েছে এ কমিশন।