তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে বিরাট ঝাঁকুনি পড়েছে এবং এর ফলে যে সম্ভাব্য মন্দার আশঙ্কা রয়েছে, সরকার সেটি বিবেচনায় নিয়েই বাজেট প্রণয়ন করেছে। একই সাথে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।’
‘তাছাড়া গত একনেক সভায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আরও দুটি প্রকল্প পাস করা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ভবিষ্যতে আরও প্রকল্প নেয়া হতে পারে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এক কোটি মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনা ও করোনাকালে প্রায় সাত কোটি মানুষকে নানাভাবে যে সহায়তা দেয়া হয়েছে এ বাজেটেও তার প্রতিফলন থাকবে,’ যোগ করেন তিনি।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দেশে লকডাউন তুলে দেয়া ভুল হয়েছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে সে সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বিএনপিকে পৃথিবীর দিকে তাকানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন ও বেলজিয়ামসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং আমেরিকার নিউইয়র্কেও যেখানে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাচ্ছিল না এবং যেখানে এখনও প্রতিদিন মৃত্যু ঘটছে, সেসব স্থানেও কিছু দিন আগেই লকডাউন তুলে দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল করা হয়েছে। তারা উন্নত অর্থনীতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও মাসের পর মাস লকডাউন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আর ভারত, পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশ তো বিভিন্ন কাজকর্ম ও যোগাযোগ খুলে দিয়েছেই।’
‘আমাদের দেশেও বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনার কারণে সবকিছু বন্ধের সময় প্রায় সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল, যাদের সরকার নানাভাবে অর্থ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। বিএনপি চায় এ খেটে খাওয়া মানুষগুলো অসুবিধায় নিপতিত থাকুক এবং সে কারণেই তারা সারা দেশে লকডাউন প্রলম্বিত করার কথা বলে। তারা খেটে খাওয়া মানুষের কথা ভাবে না বলেই এটা বলতে পারে, অন্যথায় কোনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল এ কথা বলতে পারে না,’ বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হবে। সেই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুরক্ষা ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তিন বছরের বাজেট চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাজেট এক বছরের জন্যই প্রণয়ন করা হয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই তাই। সমগ্র পৃথিবীর ক্যানভাসের দিকে না তাকিয়ে এক সময়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা করা ফখরুল সাহেবের তিন বছরের বাজেট দেয়ার কথা বলা অবাক হবার মতো। বরং তিনি যদি তিন বছরের একটি পরিকল্পনার কথা বলতেন তাহলে যথার্থ হতো।’