অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২৯ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে থেকে অনুমতি নিয়ে এ আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
এর আগে, ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬- এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে সম্রাটকে জামিন দেন।
এদিন সম্রাটের উপস্থিতিতে মামলায় চার্জগঠন ও জামিন আবেদনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অসুস্থ সম্রাটকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে হাজির করেন কারা কর্তৃপক্ষ।
ওইদিন দুপুরে সম্রাটের পক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিন আবেদনের শুনানি করেন৷
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের ক্ষেত্রে সম্রাটকে কয়েকটি শর্ত দেয়া হয়। শর্তগুলো-তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে, আদালতের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। এরপর ২৬ আগস্ট দুপুরে হাসপাতাল ছাড়েন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন সম্রাট
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের নামে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ আছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক করে মামলাটি এই আদালতে বদলির আদেশ দেন।
ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।