স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান চাঁন মিয়া। এরপর বাস, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন স্কুল বারান্দায় তার রাত কাটে। কখনও খেয়ে, কখনও আধাবেলা বা কখনও না খেয়ে কোনো রকমে জীবনের ২৬ বছর কাটিয়ে দেন তিনি। অভিমানের কাছে হার না মানা চাঁন মিয়া অবশেষে রোগে- শোকে আক্রান্ত হয়ে বার্ধক্যের কাছে হার মেনে পরিবারের কাছে ফিরেছেন।
চাঁন মিয়ার পুরো নাম মুকমুল ইসলাম। তার বাবার নাম মহিদুল ইসলাম এবং মায়ের নাম অম্বিয়া খাতুন। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের খাজুরিয়া পাড়ার মন্ডল বাড়ির বাসিন্দা তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। সংসারে তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
সামাজিক সংগঠন ‘সহায়’ এর তত্ত্বাবধানে যৌবনে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ঘরছাড়া চাঁন মিয়া ২৬ বছর পর বৃদ্ধ বয়সে বাড়ি ফিরেছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা থেকে চান মিয়াকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে। পরে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান ‘সহায়’ এর সদস্যরা। চাঁন মিয়ার কোনো জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি।ি
আরও পড়ুন: ফেনীতে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সহোদর নিহত
শেষে গত বৃহস্পতিবার ‘সহায়’ এর সদস্যরা চাঁন মিয়াকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। এই পোস্টটি নজরে আসে চাঁন মিয়ার স্বজনদের। তার স্বজনেরা তখন ‘সহায়’ এর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখে চাঁন মিয়াকে শনাক্ত করেন।
বার্ধক্যজনিত নানান রোগে আক্রান্ত চাঁন মিয়া দীর্ঘ একমাস ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন।
এরপর শনিবার রাতে দীর্ঘ ২৬ বছর পর পরিবারের কাছে ফেরেন চাঁন মিয়া। এদিন বিকেলে তার পরিবারের লোকজন এসে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়।