বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনবদ্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে স্বনামধন্য চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান আপাসেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে। রবিবার পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির বিখ্যাত পিপলস প্যালেস গ্রেট হলে স্বাধীনতার ৫০ বছরের পাশাপাশি উদযাপিত হয় আপাসেনের গৌরবময় ৩৭ বছরের পথচলা।

নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিবিসির কিংবদন্তি সাংবাদিক স্যার মার্ক টালি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে মিশে থাকা নাম মার্ক টালি ছাড়াও অনুষ্ঠানে প্রিন্স চালর্স ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রচার করা হয়।

আরও পড়ুন: পাঠ্যপুস্তকে স্বাধীনতার ঘোষণা ও ঘোষণাপত্রের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে রিট

আপাসেনের প্রধান নির্বাহী মাহমুদ হাসান এমবিই তাঁর স্বাগত বক্তব্যে আপাসেনের সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে সংগঠটির নিবিড় সংযোগের কথা তুলে ধরেন।

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার থাকাকালীন বাংলাদেশকে ঘিরে তাঁর দেখা সবচেয়ে বড় ও জমকালো আয়োজন এটি।

আপাসেনের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান বুলবুল হাসান ও কাউন্সিলর সৈয়দা সায়মা আহমেদের সঞ্চালনায় এই আয়োজনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি, আপসানা বেগম এমপি এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস।

আরও পড়ুন: ওয়াশিংটন ডিসিতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদযাপন

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিলেতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে আপাসেনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। বিলেতের শিল্পীদের অংশগ্রহণে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন জাগরণের গান দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। সাড়ে তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানের পুরোটা জুড়েই ছিল লোক ও আধুনিক নৃত্য, কবিতাপাঠ ও মুক্তিযুদ্ধ এবং আপাসেনের কার্যক্রম নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রের ব্যতিক্রমী পরিবেশনা।

সাংস্কৃতিক আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ছাড়াও চিরায়ত লোকসঙ্গীত, ব্যান্ড, চলচ্চিত্রের গান এবং আধুনিক বাংলাদেশের বিভিন্ন দশকের জনপ্রিয় সব পরিবেশনা তুলে ধরা হয়। মূল অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, যুক্তরাজ্যে ১৯৭১ সালের কার্যক্রম ও আপাসেনের ৩৭ বছরের পথচলা নিয়ে স্থিরচিত্র প্রদর্শনী।

স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে আপাসেনের উদ্যোগে একটি স্মারক প্রকাশনাও বের করা হয়।