তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ কম। এটা বাড়াতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগ করলে ১০ গুণ ভালো সেবা পাওয়া যায়।’
রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত বছরব্যাপী যক্ষ্মা সচেতনতা কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যখাতকে কখনোই গুরুত্ব দেইনি। শুধু আমরা নই, সারাবিশ্বই স্বাস্থ্য নিয়ে এতটা ভাবেনি। কিন্তু করোনা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়া কতটা প্রয়োজন। করোনা আমাদের শিখিয়েছে স্বাস্থ্যকে অবহেলা করলে একটা জাতির কি অবস্থা হয়।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনায় এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ১২ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়ছে। বাংলাদেশের ১২ থেকে ৩০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে।
‘তবে বাংলাদেশের মতো বিশ্বের যেসব দেশ করোনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে তাদের অর্থনীতি এখনও ভালো অবস্থানে রয়েছে। যারা করোনাকে অবহেলা করেছে তাদের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লোকসান গুণতে হয়েছে,’ বলেন তিনি।
যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কে জাহিদ মালেক বলেন, বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত এক বছরে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ মারা গেছে। অতএব করোনাভাইরাসের চেয়ে ভয়ঙ্কর রোগ যক্ষ্মা।
তিনি আরও বলেন, দুটি রোগের লক্ষণেই যথেষ্ট মিল রয়েছে। রোগ ছড়ানোর উপায়ও প্রায় একই ধরনের। দুটি রোগের ক্ষেত্রেই ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটে থাকে। তাই যক্ষ্মা রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে সচেতন থাকতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যক্ষ্মাকে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দেই না। কিন্তু কোনো রোগই আসলে ছোট নয়। কোনো রোগকেই অবহেলা করা উচিত নয়।
‘আমরা এক সময় মনে করতাম সংক্রমক রোগে বেশি মারা যায়, কিন্তু সেটাই এখন নিয়ন্ত্রণে। আর এদিকে অসংক্রমক রোগ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সুতরাং আমাদেরকে যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই সচেতন হতে হবে,’ বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার টিকার অভাব নেই, ভবিষ্যতেও হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বেসরকারি মেডিকেলে চিকিৎসা ফি নির্ধারণ করে দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, আমরা দেশ থেকে টিবি নির্মূল করতে চাই। কিন্তু দিনে দিনে এর জটিলতা বাড়ছে। বিশেষ করে হাড়, অন্ত্র, জরায়ু এবং অস্ত্রপচারস্থলে যক্ষ্মার সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে, যা নির্ণয় করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত যক্ষ্মা নির্ণয় ও প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, যক্ষ্মা শুধু নির্দিষ্ট কোনো একটি অঙ্গের রোগ নয়। যক্ষ্মা হয় না, শরীরে এরকম অঙ্গ খুব কমই আছে। শতকরা ৮৫ ভাগ যক্ষ্মা ফুসফুসেই হয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অধ্যাপক ডা. সেব্রীনা ফ্লোরা, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: যাদু বা ম্যাজিক দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী