কোহিনুর,মিনতি,ওশনা,আলেমা,মঞ্জুয়ারা। এরা সবাই গাইবান্ধার গ্রামাঞ্চলের অতি দরিদ্র ঘরের গৃহিণী। লাইদের মতো ৬ শ’ গৃহিণী প্রতারণার শিকার হয়েছে। শিশু ভাতা,বয়স্কা ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেয়ার নামে গোলাপীদের কাছে নুরুল ইসলাম ও মুক্তি নামের দুই প্রতারক লাখ লাখ টাকা আদায় করে।
এ নিয়ে ফুসে উঠেছে দরিদ্র গ্রামীণ নারীরা। তারা শহরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার হতদরিদ্র শিল্পী আকতার। স্বামী কাজ করেন দিন মজুরের। দিন আনে দিন খাওযার সংসার তাদের। শিল্পী বেগমের কাছে আসেন গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদের পিয়ন নুরুল ইসলাম ও মুক্তি নামের এক নারী দালাল। তারা বলেন,আপনারা টাকা দিলে আপনাদের দেয়া হবে বিধবা,বয়স্ক,প্রতিবন্ধী,মাতৃকালীন শিশু ভাতা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।
এই আশ্বাসে গাইবান্ধার দাড়িয়াপুর,গিদারী,ঘগোয়া,রুপার বাজার,মালিবাড়ি ও বোয়ালী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের সহজ সরল গৃহবধূদের এই ফাঁদে ফেলেন নুরু নামের ওই পিয়ন এবং তার দালাল মুক্তি বেগম। তারপর হয় লেনদেন।
বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবেন এই আশায় ছাগল বিক্রি করে দালালের হাতে তুলে দেন ১৬ হাজার টাকা। ভিক্ষুক জামাল মিয়া নিজে স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে বাস করেন ৫ টিনের একটি ছাপড়া ঘরে। সারাদিন ভিক্ষা করে যা পায় তাতে দিন চলে কোন মতো। তাকে লোভ দেখানো হয় ১৮ হাজার টাকা দিলে তাকে দুটি প্রতিবন্ধী কার্ড ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর নিয়ে দিবেন। এই আশায় ভিক্ষুক জামাল মিয়া গ্রামের মানুষের কাছে লাভের উপর ১৮ হাজার টাকা নেন। গোটা টাকাই তুলে দেন দালালের হাতে। দালাল মুক্তি বেগম ও নুরু মিয়া তাদের হাতে তুলে দেয় ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড ও ঘরের চাবি।
খুশিতে গদগদ হয়ে প্রতিবন্ধী জামাল মিয়া পায়ে হেটে পৌঁছেন কার্ডের টাকা তুলতে। কিন্তু গিয়ে জানতে পারেন তার কার্ড ও ঘরের চাবিটি ভুয়া। তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
চলে আসেন গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে। সেখানে তিনি জানতে পারেন টাকা নিয়ে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বাড়িতে ফিরে ঘটনা তিনি গ্রামের অন্যদের বলেন। তারাও পরপর কয়েকদিন সমাজ সেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তাদের কাছে যে কার্ডটি দেয়া হয়েছে সেটি আসল নয়। বয়স্ক ভাতা ,বিধবা ভাতা,শিশু ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতার নকল কার্ড ছাপিয়ে ওই দুই ব্যক্তি তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
আরও পড়ুন: আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার নামে প্রতারণা, চক্রের মূল হোতা আটক