সোমবার খুলনা মহানগর হাকিম আদালত-১ (দ্রুত বিচার) এর বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর শাহজালালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদেশের পর শাহজালালের আইনজীবী নুরুল হক বলেন, ‘ছিনতাই মামলার একমাত্র আসামি ছিলেন শাহজালাল। তার কাছ থেকে কিছু উদ্ধার করা যায়নি। তারপরও তাকে সাজা দেয়া হয়েছে।’
এ রায় প্রভাবিত হয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শাহজালালের বাবা জাকির হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই পুলিশের লোকজন আদালত এলাকায় অবস্থান নেন। তারা কয়েকবার আমাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা কোনো কথা বলিনি। আমার ছেলের চোখ নিল, ছেলেকে অন্ধ বানাল, এবার তাকে জেলেও ঢোকাল। গরিবের ওপর এমন অত্যাচার আল্লাহ সহ্য করবেন না।’
এদিকে, পুলিশের নির্যাতন বিষয়ে জাকির হোসেনের মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাতে শাহজালালকে থানাহাজতে রেখে ৪০ হাজার টাকার জন্য প্রথম দফায় নির্যাতন চালায় পুলিশ। এ সময় তার হাত জখম হয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের লোকজন শাহজালালকে গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যায়।
ঘটনার পরদিন ১৯ জুলাই শাহজালালকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তার পরিবারের লোকজন হাসপাতালের বারান্দায় তাকে দুই চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান।
এ ঘটনায় শাহজালালের বাবা জাকির হোসেন বাদী হয়ে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
তবে থানার তৎকালীন ওসি নাসিম খানের দাবি, ‘অভিযোগ অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শাহজালাল একজন ছিনতাইকারী। ছিনতাই করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। তখন স্থানীয় জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। সেখানে শাহজালাল চোখ হারায়। মামলা থেকে বাঁচতে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে শাহজালাল।’
কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন যে সেই রাতে ওই এলাকায় ছিনতাই ও মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ছিনতাইয়ের এ কথিত ঘটনায় সুমা আক্তার নামে এক নারী মামলা করেন। মামলার নম্বর-৩৪। বিষয়টির তদন্ত করে একই বছরের ২৯ জুলাই এসআই মো. মিজানুর রহমান আদালতে শাহজালালকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন।