একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে যারা কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন তাদের সংক্রমণের আট মাস পরেও করোনাভাইরাস থেকে শক্ত প্রতিরোধ সক্ষমতা থাকতে পারে।
এমআইটি টেকনোলজি রিভিউতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় দেখা গেছে যে কাউকে টিকা দেয়ার পর বা সংক্রমণ থেকে সেরে উঠার পরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে প্রতিরোধক কোষ দীর্ঘকাল ধরে সক্ষম থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে এক দিনে ২২ মৃত্যু, শনাক্ত ৬৯২
ফলাফলটি আশাব্যঞ্জক যে এই এন্টিবডি বছরের পর বছর ধরে শরীরে স্থায়ী হতে পারে। একই সাথে কোভিড-১৯ টিকার কার্যক্ষমতার মেয়াদ নিয়ে যে শঙ্কা দেখা গিয়েছিল তাও দূর হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার লা জোলা ইনস্টিটিউটের গবেষক ও এ গবেষণা দলের সদস্য শেইন ক্রোটি বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমাদের আশঙ্কা ছিল যে এ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে শরীরের স্মৃতি খুব ভালো নয়। তবে এখন দেখা যাচ্ছে প্রতিরোধের স্মৃতি অত্যন্ত ভালো।’
গবেষণার ফলাফল ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এর আগের গবেষণাগুলোতে দাবি করা হয়েছিল যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুতই আবারও আক্রান্ত হতে পারেন। নতুন গবেষণায় বরং উল্টো দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ন্যায্যভাবে টিকাদান ‘জীবন বাঁচায়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্থিতিশীল করে’: ডব্লিউএইচও প্রধান
কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
গবেষণায় বলা হয়, খুবই ছোট একটি অংশের মানুষ দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। টিকার মাধ্যমে যে একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গঠন করা সম্ভব তাও এ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
নতুন গবেষণায় কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ১৮৫ নারী-পুরুষের রক্তের নমুনা নেয়া হয়। তাদের বেশির ভাগই মাঝারি মাত্রার সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তাদের মাত্র ৭ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রতি ব্যক্তির ছয় দিন থেকে আট মাস ব্যবধানে তাদের রক্তে থাকা এন্টিবডির পরিমাণ হিসাব করা হয় এবং ৪৩টি নমুনা ছয় মাস পরে নেয়া হয়।
এতে দেখা যায়, ৮ মাস পরেও তাদের দেহে এন্টিবডি সামান্য হ্রাস পেয়েছে। যদিও একেকজনের দেহে একেকরকম হারে এন্টিবডি হ্রাস পেয়েছে। তবে টি-সেলের সংখ্যা একেবারেই কমেনি বলে গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়েছে। বি-সেলের সংখ্যাও স্থিতিশীল ছিল। কখনও কখনও এর পরিমাণ বাড়তেও দেখা গেছে। অর্থাৎ, মানবদেহ নতুন করে এন্টিবডি গঠন করছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি: আক্রান্ত ৮ কোটি ৮৮ লাখ ছাড়াল
করোনার টিকা: ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি পেল দেশের গ্লোব বায়োটেক
করোনাভাইরাসের আরেকটি ধরন সার্স ভাইরাসকে কোভিড-১৯-এর একদম কাছাকাছি বলে ধরে নেয়া হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবদেহে সার্সের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে ১৭ বছর। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের দেহেও যুগের পর যুগ ধরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থায়ী হবে।