রবিবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের কর আদায়ের সহজ পদ্ধতি ও নগদে আদায়ের সহজ পথ টেলিযোগাযোগ খাত। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ খাতের অবদান ৭ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। চার অপারেটরই এ খাতে বছরে প্রায় ২৮-৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করে, যার সিংহভাগই সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
তিনি বলেন, দেশের ১৭ কোটি নাগরিকের কাছ থেকে সম্পূরক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, সার চার্জ, আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক, সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল, বিনিয়োগ কর, করপোরেট সিম ট্যাক্সসহ সকল কর একজন নাগরিকের কাছে আদায় করার একমাত্র সহজ পদ্ধতি টেলিযোগাযোগ সেবা। যে কারণেই গত ৩ বছরে কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বঙ্গবন্ধু সেতু ও নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুতে এ খাতের গ্রাহকদের ১ শতাংশ সার চার্জ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চলতি মাসে ১৬ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার সক্রিয় সিম ও ১০ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহারের আগেই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ১০০ টাকায় ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, সাথে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর, সাথে ১ শতাংশ সার চার্জ মিলিয়ে ৩৩ দশমিক ৫৭ টাকা দিচ্ছে।
তিনি জানান, বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে এ খাতে গ্রাহক কমেছে প্রায় ২০ লাখ। উচ্চ মূল্য ও ৫০ শতাংশ নাগরিক এ সেবায় আসতে পারছে না, যার ফলে, অনলাইন টিকিট কাটা থেকে বঞ্চিত থাকায় আজ যাত্রী সংকটের কারণে রেল বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। দেশের সকল আদালত ও স্কুল-কলেজ অনলাইন সেবার বাহিরে রয়েছে। এমতাবস্থায়, দুর্যোগের মুহূর্তে এ সেবায় কর বৃদ্ধি অন্যায়। সেই সাথে গত ৫ বছর ধরে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের দিবাগত রাত হতেই কর আদায় হয়েছে, গ্রাহকদের সাথে ন্যায় বিচার করা হয়নি। আমরা এ অর্থ ফেরত চেয়ে ইতোমধ্যে সরকারের কাছে আবেদন করেছি। সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে এ অর্থ গ্রাহকদের ফেরত প্রদানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও মাননীয় তথ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ করেছেন। সেই সাথে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী কর বৃদ্ধির প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
‘আমরা আগেই লক্ষ্য করেছি, আন্তর্জাতিক কলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে বৈধ কলের হার কীভাবে নিম্নমুখী হয়েছিল। বর্তমান কর বৃদ্ধির ফলে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আদায় হবে বলে সরকারের যে পরিকল্পনা তা সঠিক নয়। এতে করে ব্যবহার কমবে, রাজস্ব কম আদায় হবে। অন্যদিকে গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হবে,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরও বলেন, আজ যদি শতভাগ নাগরিককে টেলিযোগাযোগ সেবার আওতায় আনা যেত তাহলে কর আদায় হতো প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের সকল নাগরিকের হাতে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়া যেত।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারের কাছে বর্ধিত কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।