১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত নির্বাচনের সময়কালে ভুয়া (ফেইক) অ্যাকাউন্ট ব্লক করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ ফেসবুক তালিকাভুক্ত করেছে।
ভারতের নির্বাচনকে ‘শীর্ষ অগ্রাধিকার’ হিসেবে উল্লেখ করে ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট ফর সিভিক ইন্টিগ্রিটি বিভাগের পরিচালক সমিধ চক্রবর্তী বলেন, নির্বাচনের জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান বিগত দুই বছর ধরে বিপুল পরিমাণ পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, ইংরেজি, হিন্দী ও অন্যান্য আঞ্চলিক ভারতীয় ভাষাতে মিথ্যা গল্প চিহ্নিত করার জন্য ভারতীয় গণমাধ্যম সংস্থাগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করেছে ফেসবুক।
২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় মিথ্যা তথ্য ছড়ানো রোধে ব্যর্থ হওয়ার পর জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াটিকে ব্যাপক নজরদারির মধ্যে আনা হয়। এমনকি নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গকে মার্কিন সিনেটে সাক্ষ্য পর্যন্ত দিতে হয়।
হোয়াটসঅ্যাপের মতো ফেসবুকের মালিকানাধীন ম্যাসেজ অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে নজরদারিতে রেখেছে ভারতীয় সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থা। মিথ্যা তথ্য ও হত্যা সম্পর্কিত গুজব ছড়ানো রোধের জন্য তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবের কারণে ভারতের গ্রামাঞ্চলে দাঙ্গায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ একসাথে পাঁচজন প্রাপকের কাছে বার্তা প্রেরণকে সীমিত করে, আগে ২৫৬ জনকে একসাথে বার্তা পাঠানো যেত।
তবে সোশ্যাল মিডিয়া ভারতীয় রাজনৈতিক প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যাপকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এবং তরুণ ভোটারদের সাথে যোগাযোগ করে।
এদিকে গুগল, টুইটার ও ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করছে ভারতের নির্বাচন কমিশন, যাতে ব্যবহারকারীর বিভিন্ন তথ্য ফাঁস ও রাজনৈতিকভাবে প্রেরিত প্ররোচণামূলক তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধ করা যায়।
সমিধ চক্রবর্তী বলেন, ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি। ফেসবুকের নিরাপত্তার জন্য কর্মীর সংখ্যা আমরা তিনগুণ বাড়িয়ে ৩০ হাজার করেছি।’
উল্লেখ্য, বিশ্বে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যার দিকে সবার উপরে রয়েছে ভারত। দেশটির ৩০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। আগামী ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ ভারতে সাতটি ধাপে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৩ মে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার সময়সূচি রয়েছে।