সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তত্ত্বাবধানে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারের মরদেহ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে রাখা হয়।
ডিরেক্টর’স গিল্ড, পরিচালক সমিতি, নাটক নির্মাতা সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা একাডেমিসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন আমজাদ হোসেনের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।
তাকে শেষবারের মতো দেখতে অনেক বরেণ্য ব্যক্তিত্বসহ বিপুল সংখ্যক জনতা শহীদ মিনারে জড়ো হন।
প্রয়াত পরিচালকের ছেলে সোহেল আরমান জানান, তাদের বাবা সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ সহায়তা ও চিকিৎসা পাওয়ায় তারা সন্তুষ্ট।
মারা যাওয়ার সাত দিনের মাথায় শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে পৌঁছায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা আমজাদ হোসেনের মরদেহ। মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট থাইল্যান্ড থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পরে মোহাম্মদপুরের বাইতুল আমান মসজিদে জানাজা শেষে মরদেহ আদাবরের বাসায় নেয়া হয়। রাতে তা বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিল।
আমজাদ হোসেনকে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী জামালপুর জেলায় নিজ গ্রামে দাফন করার কথা রয়েছে।
প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকার ১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৮ নভেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ব্যাংকক নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেন।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ১৮ নভেম্বর আমজাদ হোসেনকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। সেখানে বেশ কিছুদিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
আমজাদ হোসেন একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, গল্পকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি ‘ভাত দে’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’র মতো কালজয়ী অনেক সিনেমা নির্মাণ করেছেন।
‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
এছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।