ফরিদপুর, ২৪ মে (ইউএনবি)- টেপাখোলা স্লুইসগেট থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মহাসড়ক পর্যন্ত ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের ১৫ কিলোমিটার খালে দেয়া হয়েছে অর্ধশতাধিক বাঁধ। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে খালটি এখন ছোট ছোট গর্তে পরিণত হয়েছে। এতে সেচ ব্যবস্থার পাশাপাশি পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে।
সদর উপজেলার ডিগ্রীরচর ইউনিয়নের মনোডাঙ্গী এলাকায় পদ্মা নদীর পানি আসার উৎস মুখে বাঁধ নির্মাণ করায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে বেড়িবাঁধ খালটি। খাল পাড়ের কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে সেচ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মিলন পালের এমপিএ, মুজিবুর মাতুব্বরের এমএমবি ও ওয়াহিদ মিয়া কুটির এমজেডএমসহ ৩৭টি ইটভাটার মালিকরা নিয়মনীতি না মেনে ট্রাক প্রবেশের জন্য খাল বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করেছেন।
ডিগ্রীরচর এলাকার অটোচালক রফিকুল মন্ডল জানান, বেড়িবাঁধের এ খাল অনেক চওড়া ছিল। নৌকা চলাচল করত। খালের পানি ফসলে মাঠে নেয়া হত। আর এখন খালটির পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে ছোট ছোট গর্তে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যে জমিতে ফসল ফলাতাম সেটি এখন ইটভাটা। বাকি যে জায়গাটুকু আছে তাতেও কৃষিকাজ করা যাচ্ছে না। আশপাশে পানি উঠানোর কোনো মেশিন নেই। আগে খালের পানি দিয়ে সেচের কাজ চলত। এখন তো ভাটা মালিকরা খাল বন্ধ করে দিয়ে রাস্তা বানিয়েছেন।’

গফুর তালুকদার নামে আরেক কৃষক জানান, ইটভাটায় ট্রাক্টর ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এসব ট্রাক্টর কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য সরকার ভর্তুকি দেয়। সেই ট্রাক্টর দিয়ে চলছে পরিবেশ ধ্বংসকারী ইটভাটার মাটি আনা নেয়ার কাজ।
তবে মুজিবর মাতুব্বর নামে এক ভাটা মালিকের দাবি, খালের ওপর প্রত্যেক ইটভাটা মালিক যে অংশটুকু ভরাট করেছেন তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে লিজ নেয়া।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ইটভাটা মালিককে খাল বন্ধ করে রাস্তা করার জন্য কোনো জমি লিজ দেয়া হয়নি। বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না। অবশ্যই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’