ব্যবসায়ীরা জানান, চলমান করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে মোটা চালের দাম ৩৬-৩৮ টাকা থেকে বেড়ে ৪৬-৪৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে এবং মিনিকেট চাল প্রতি কেজিতে ৫০-৫২ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
করোনাভাইরাস আতঙ্কে আসন্ন লকডাউনের ভয়ে ক্রেতারা প্রচুর পরিমাণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছেন এবং মজুদ করছেন যার কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানান।
অবশ্য পেঁয়াজের দাম একদিন আগের থেকে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে।
বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৬-৪৮ টাকায় এবং মিনিকেট চাল ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে ইউএনবির প্রতিনিধি সরেজমিনে দেখেন।
পাইকারি বাজারে দাম অবশ্য কমই রয়েছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারী এম/এস ফাতেমা রাইস এজেন্সির মালিক মাহফুজুর রহমান জানান, তারা মোটা চাল ৪২-৪৬ টাকায়, মাঝারি মানের মিনিকেট ৫৫-৫৭ টাকায়, নাজিরশাইল ৬৪-৬৮ টাকায় এবং চিনিগুঁড়া প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন।
‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দাম হঠাৎ লাফিয়ে উঠল। যারা সাধারণত এক বস্তা কিনত তারা তিন বস্তা নিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে মিলাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে,’ মাহফুজুর যোগ করেন।
স্থানীয় ধানের নতুন ফসল বাজারে আসার পরে চালের দাম কমবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। এছাড়াও, এখন অতিরিক্ত পরিমাণে যারা কিনছেন তারা বর্ধিত সময়ের জন্য আবার চাল কেনা থেকে বিরত থাকবেন।
সদরঘাটের খুচরা ব্যবসায়ী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের কোনো পছন্দ নেই। আমরা কেবলমাত্র পাইকারি বাজারের দাম অনুযায়ী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারি, সম্ভবত লাভের জন্য সামঞ্জস্য করা হয়েছে।
এদিকে, আগের দিনের তুলনায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে।
বংশাল এলাকার দোকানদার সাব্বির হোসেন জানান, শনিবার পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করলেও রবিবার তারা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি করেন।
‘আমরা স্থানীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছি ৫০ টাকায় এবং আমদানি করা ৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে দাম আরও ২০ টাকা কম ছিল। করোনাভাইরাস প্রভাবের কারণে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরে দাম বাড়ছে,’ তিনি যোগ করেন।
তবে রবিবার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি রসুন ১৫০-১৬০ টাকায়, আলু ৩০ টাকায়, সয়াবিন ৯৫ টাকায়, মসুর ডাল ১০০-১২০ টাকায়, ডিম প্রতি হালি ৩২-৩৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায় এবং আমদানি করা ৪০-৬০ টাকায়।
টিসিবির তথ্যানুযায়ী, ‘রবিবার প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৮-৫০ টাকায় এবং মিনিকেট চাল ৫৫-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন ধরনের রসুন বিক্রি হয়েছে ১০০-১৪০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ১৫০-১৮০ টাকা। এক কেজি সয়াবিন তেল (বোতল) ১০৫-১১০ টাকায় এবং সুপার পামওয়েল তেল ৭৫-৮৩ টাকায় বিক্রি করা হয়।’
এদিকে বেগুন প্রতি কেজি ৫৫ টাকা, পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৪০-৪৫ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রুই মাছ প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০-১৫০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১২০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়।
কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সেক্রেটারি হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, সরকারের উচিত পাইকারি ও খুচরা বাজারের দামগুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা, যাতে বিক্রেতারা দেশের প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে।