করোনাভাইরাসের কারণে জনশূন্য কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে কুকুরের সাথে ঘুমিয়ে থাকে এক শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃহস্পতিবার প্রকাশ পায়। পরে নেটিজেনদের ছড়িয়ে দেয়া ছবিটি ভাইরাল হয়ে উঠে।
ছবিটি নজরে এলে সাগর পাড়ে শুয়ে থাকা সেই অনাথ শিশু ইমনকে উদ্ধার করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। পথশিশুকে তিনি নিজ বাসভবনে আশ্রয় দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে সাগর পাড়ে যখন ইমনকে খোঁজে পান তখনও সে কুকুর পাশে নিয়ে ঘুমাচ্ছিল। তারপর সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় জেলা প্রশাসকের বাংলোতে। গত দুই দিনে, জেলা প্রশাসক ছোট্ট শিশুটির কাছ থেকে তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন।
শনিবার জেলা প্রশাসক জানান, তার মা বাবা নেই। দুই ভাই চট্টগ্রামে। এক বোন কক্সবাজার শহরে বাসাবাড়িতে কাজ করে। বোনটি তাকে সাথে করে এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু অভাবের কারণে সে আশ্রয় নেয় সাগরপাড়ে। সাগরপাড়ের টোকাই হিসেবেই সে পরিচিত।
কামাল হোসেন বলেন, ‘শিশুটিকে সাগরপাড় থেকে বাংলোতে এনে নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে খেতে দিলাম। খাবারের পর গল্প করার সময় সে সাগরপাড়ে চলে যেতে চাইল। আমি কারণ জানতে চাইলে সে বলল কুকুরটি তার জন্য অপেক্ষা করবে। সে না থাকলে কুকরটি কোথায় খাবে, তাকে কে খাওয়াবে?’
একটি কুকুরের জন্য শিশুটির এ রকম মানবিকতা দেখে অবাক জেলা প্রশাসক আরও জানান, এখন থেকে সে শিশু অধিকার নিয়ে বাস করবে।
সাগরপাড়ের মোহাম্মদ নুর নামে একজন জানান, ইমন পর্যটকদের গান শুনিয়ে ও বিভিন্ন জনের ফরমায়েশ পালন করে দৈনিক যা আয় করে তার বেশিরভাগই তার সাথে থাকা কুকুরের খাবার হিসেবে ব্যয় করে। কুকুরটি তার নিত্যসঙ্গী। সাগরপাড়েই তার দিন কেটে যায়।
করোনা আতঙ্কে গত সপ্তাহ ধরে শুনশান পরিস্থিতি বিরাজ করছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। যে বালুচর হাজার হাজার পর্যটকের পদচারণায় মুখর ছিল সে বালুচর এখন খাঁ খাঁ করছে। পর্যটকদের বসার চেয়ারগুলোও নেই। সৈকতের বালুচরে দোকানগুলো বন্ধ। হকারদের হাঁক-ডাকও নেই।