শিশু শ্রমিক জাবেদ ও সাকিব জানায়, অভাব অনটন ও সংসার চালানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজ করতে হয় তাদের। এছাড়া ন্যায্য মজুরি থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ইউএনবির এই প্রতিনিধি দেখেন, লক্ষ্মীপুরের সবর্ত্রই শিশু শ্রম বাড়ছে। জেলা শহরসহ রামগঞ্জ, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারের ওয়ার্কশপ, লেদ মেশিন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, শিল্প কারখানায় ও ইটভাটায় কাজ করছে শত শত কোমলমতি শিশু।
যে বয়সে তাদের স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সেই করতে হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ সব কাজ করতে হচ্ছে তাদের। দিনে ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় এসব শিশুদের।
অনেক শিশু শ্রমিক অভিযোগ করে জানায়, সারাদিন কাজের পরও ন্যায্য মজুরি দেয় না মালিকরা। বরং কাজ করতে দেরি হলেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। গত এক বছরে এ জেলায় প্রায় ২০ শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
২০১৬ সালের ৮ মে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের আনন্দ বেকারিতে কাজ না করায় ১৩ বছরের শিশু শ্রমিক আলাউদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরেরদিন নিহতের বাবা কারখানার মালিকসহ ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এক বছর পার হলেও মামলায় কোনো অভিযোগপত্র দেয়নি পুলিশ।
সম্প্রতি কমলনগর উপজেলার হতদরিদ্র আবদুস সোবাহানের ছেলে শাহজাহানকে ইটভাটায় কাজ কম করার অভিযোগে ৫ দিন আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালায় ইটভাটার মালিক।
প্রায়ই ঝুঁকিপূর্ণ এসব কাজ করতে গিয়ে একইভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে অনেক শিশু শ্রমিককে।
শিক্ষাবিদ খলিলুর রহমান জানান, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা কম টাকার বিনিময়ে শিশুদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজ করাচ্ছেন। শিশু শ্রম বন্ধ করে শিশুদেরকে স্কুলমুখী করার দাবি জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল জানান, আগামী ৭ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে শিশু শ্রম বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিগগিরই এসব শিশুদের স্কুলমুখী করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।