নির্বাচিত হওয়ার পর শনিবার জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে কমলা বলেন, ‘এ অফিসে আমি হয়তোবা প্রথম নারী, কিন্তু আমিই শেষজন হব না।’
আমেরিকান রাজনীতিতে দুই শ বছরেরও অধিক সময় ধরে সর্বোচ্চ পদগুলো মূলত শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের মুঠোতে রয়েছে। সেই প্রতিবন্ধকতা ভেঙে দেয়া কমলা তার সফলতার জন্য নারী, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
কমলা তার ভাষণে নিজেকে সেইসব নারীদের সংক্রাম, সংকল্প ও শক্তির প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করেন। এ সময় তার শরীরে ছিল নারীদের ভোটাধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে পরা সাদা স্যুট।
দেশের অন্যতম বলিষ্ঠ বাধা ভেঙে একজন নারীকে নিজের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেয়ার মতো সাহস দেখানোর জন্য নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও প্রশংসা করেন কমলা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ৫৬ বছর বয়সী সিনেটর কমলা দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তিও যিনি ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার এ নির্বাচিত হওয়া আমেরিকার সংস্কৃতির বহুত্ববাদকেই তুলে ধরে। যদিও এ বৈশিষ্ট্যটি ওয়াশিংটনে ক্ষমতার কেন্দ্রে বহুলাংশে অনুপস্থিত।
চার বছর আগে হিলারি ক্লিনটনের পরাজয়ের ফলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়া নারীদের জন্য আশার নতুন আলো হয়ে দেখা দিয়েছেন নারী হিসেবে আমেরিকান সরকারের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মর্যাদা ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে যাওয়া কমলা। নিজের কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয়ের কারণে তিনি ব্যক্তিগত স্তর থেকেই পুলিশি নির্যাতন ও পদ্ধতিগত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
অনুষ্ঠানে বাইডেনের বক্তব্যের পর মঞ্চে স্বজনদের নিয়ে হাজির হন কমলা।
গত দুই দশক ধরে ডেমোক্র্যাটিক রাজনীতিতে উদীয়মান তারকা হিসেবে থাকা কমলা সিনেটর হওয়ার আগে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ছয় বছর এবং সান ফ্রান্সিসকো ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।
বাইডেন তার নির্বাচনী দৌড়ের সঙ্গী হিসেবে কমলাকে বাছাই করার আগে তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে নিজেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন। পরে প্রাথমিক বাছাইয়ের দৌড় থেকে তিনি সরে দাঁড়ান এবং বাইডেনকে সমর্থন দেন। তারা আগামী ১০ জানুয়ারিতে শপথ নেয়ার অপেক্ষায় আছেন।
১৯৬৪ সালে জন্ম নেয়া কমলার মা শ্যামলা গোপালান ভারতীয় এবং বাবা ডোনাল্ড জে হ্যারিস জ্যামাইকান। কমলা ও তার বোন ছোট থাকতেই তাদের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং পরে কমলা তার মায়ের কাছে বড় হন।
মাকে স্মরণ করে কমলা শনিবার রাতে বলেন, ‘তিনি যখন ১৯ বছর বয়সে ভারত থেকে এখানে এসেছিলেন, তখন তিনি সম্ভবত এ মুহূর্তটি খুব একটা কল্পনাও করেননি। তবে তিনি এমন এক আমেরিকাতে গভীরভাবে বিশ্বাসী ছিলেন যেখানে এ ধরনের মুহূর্ত ঘটা সম্ভব।’