মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, হামাসের হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে তিনি ফোর্ড ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। নিহত ও নিখোঁজদের মধ্যে আমেরিকানরাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক ও অত্যাধুনিক বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড এবং এর প্রায় ৫ হাজার নাবিক এবং যুদ্ধবিমানের ডেকের সঙ্গে ক্রুজার এবং ডেস্ট্রয়ার থাকবে। এটি হামাসের কাছে অতিরিক্ত অস্ত্র পৌঁছানো বন্ধ ও নজরদারি চালাবে। এছাড়া যে কোনও কিছুর জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে এটি।
এই বিশাল সামরিক স্থাপনার মোতায়েন সংঘাতের যেকোনো আঞ্চলিক সম্প্রসারণ রোধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। কিন্তু ইসরায়েলি সরকার রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ‘উল্লেখযোগ্য সামরিক পদক্ষেপের’ জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩২
প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী হামলায় অন্তত চারজন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আরও সাতজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানান এক মার্কিন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনাকারী কর্মকর্তা বলেন, সংখ্যাগুলো বাড়ছিল এবং একটি সম্পূর্ণ গণনা শেষ হওয়ার পর এটি পরিবর্তন হতে পারে। নিহত বা নিখোঁজদের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ফোর্ডের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রুজার ইউএসএস নরম্যান্ডি এবং ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস টমাস হাডনার, ইউএসএস রামেজ, ইউএসএস কার্নি এবং ইউএসএস রুজভেল্ট পাঠাচ্ছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে বিমান বাহিনীর এফ -৩৫, এফ-১৫, এফ -১৬এবং এ -১০ যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন বৃদ্ধি করছে।
অস্টিন এক বিবৃতিতে বলেন, 'প্রয়োজনের তাগিদে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী বাহিনী প্রস্তুত রেখেছে।’
এছাড়াও, বাইডেন প্রশাসন ‘দ্রুত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গোলাবারুদ সহ অতিরিক্ত সরঞ্জাম এবং সম্পদ সরবরাহ করবে।’ অস্টিন বলেন, প্রথম নিরাপত্তা সহায়তা আজ থেকে শুরু হবে এবং আগামী দিনগুলোতে পৌঁছাবে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের ফিলিস্তিন বিরোধী নীতিকে 'টাইম বোমা' আখ্যা দিয়েছে আরব লীগ
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার টেলিফোনে 'হামাস যোদ্ধাদের হাতে শিশু, বয়স্ক, যুবক এমনকি পুরো পরিবার জিম্মি হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, 'এ ধরনের নৃশংস নৃশংসতার বিরুদ্ধে সব দেশকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নেতানিয়াহুকে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং বলেছেন যে ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য অতিরিক্ত সহায়তা আসছে।
ইসরায়েলের কোনো শত্রু যেন মনে না করে যে তারা বর্তমান পরিস্থিতি থেকে সুবিধা নিতে পারবে বা করা উচিত। তা নিশ্চিত করার উপায় নিয়েও তারা আলোচনা করেন বাইডেন ও নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: হামাসের আকস্মিক হামলা-ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়ায় নিহত ১০০০ ছাড়িয়েছে