চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কাছে সফলভাবে অবতরণের দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সূর্য নিয়ে গবেষণা করতে প্রথম মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করেছে ভারত।
আদিত্য-এল১ মহাকাশযানটি দক্ষিণ ভারতের শ্রীহরিকোটা স্পেস সেন্টার থেকে একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যানের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে প্রায় ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে একটি পয়েন্ট থেকে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য উড্ডয়ন করে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) বলেছে, মহাকাশযানটি সূর্যের করোনা, ক্রোমোস্ফিয়ার, ফটোস্ফিয়ার এবং সৌর বায়ু পর্যালোচনার জন্য ৭টি পেলোড (স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগের যন্ত্র) দিয়ে সজ্জিত।
২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের মহাকাশযান অবতরণ করে। ফলে এই অংশে প্রথম অবতরণের স্বীকৃতি পেল দেশটি।
আরও পড়ুন: অবিচল নিষ্ঠার মাধ্যমে ভারত কী করতে পারে তার উজ্জ্বল প্রমাণ চন্দ্রযান-৩: ভারতীয় মন্ত্রিসভা
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, চাঁদে ভারতীয় মহাকাশযান অবতরণের অঞ্চলে পানির মজুদ থাকতে পারে।
২০১৯ সালে চাঁদে অবতরণের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে, যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে এই মাইলফলক অর্জন করল ভারত।
ইসরোর সাবেক বিজ্ঞানী মনীশ পুরোহিত বলেন, ভারতের সফল চাঁদে অবতরণ এবং সূর্য অধ্যয়নের মিশন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ইসরোর ভাবমূর্তি পরিবর্তন করবে।
ইসরো বলেছে, আদিত্য-এল১ পৃথিবী-সূর্য সিস্টেমের এল১ পয়েন্টের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এই পয়েন্ট থেকে সূর্যের অবাধ গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে রিয়েল টাইমে সৌর ক্রিয়াকলাপ এবং মহাকাশের আবহাওয়ার ওপর এগুলোর প্রভাব পর্যবেক্ষণের সুবিধা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চন্দ্রযান-৩: ইসরো
টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকায় এক নিবন্ধে মহাকাশ বিজ্ঞানী বি আর গুরুপ্রসাদ বলেন, একবার নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে পারলে স্যাটেলাইটটি উচ্চতর সৌর ক্রিয়াকলাপ থেকে পৃথিবীতে পাওয়ার গ্রিড ধ্বংস করার সম্ভাবনা রাখা কণা ও বিকিরণের আক্রমণের নির্ভরযোগ্য পূর্বসতর্কতা সরবরাহ করতে পারবে। উন্নত সতর্কতা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কাঠামোর মেরুদণ্ড ও মহাকাশ স্টেশনে বসবাসকারীদের রক্ষা করতে পারে।
মনীশ পুরোহিত বলেন, ‘এই সাতটি পেলোড আমাদের দৃশ্যমান সম্ভাব্য সমস্ত বর্ণালী (স্পেকট্রাম), অতিবেগুনী ও এক্স-রে রশ্মি আছে এমন অবস্থানে থেকে সূর্যকে একটি নক্ষত্র হিসেবে পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছে।… পুরো বিষয়টি এমন যে আমরা একটি কালো ও সাদা ছবি থেকে সূর্যের রঙিন, হাই-ডেফিনিশন ৪কে রেজ্যুলেশনের ছবি পেতে যাচ্ছি। ফলে সূর্যে যা ঘটছে তা আমাদের কাছে আর অজানা থাকবে না।’
আরও পড়ুন: ইসরো চন্দ্রযান-৩: ভারতের চন্দ্র বিজয়ে নারী বিজ্ঞানীদের সাফল্য