তিনি দাবি করেন, তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বসবাসকারী হিন্দু ও চীনা সম্প্রদায়ের বিষয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করে শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগে জাকির নায়েককে স্থানীয় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার বিরুদ্ধে উত্তেজক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। খবর মালয় মেইল।
সম্প্রতি জনপ্রিয় ‘পিস টিভির’ প্রতিষ্ঠাতা, ইসলামের প্রচারক ও বিশিষ্ট উপস্থাপক জাকির নায়েক বলেন, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের থেকে মালয়েশিয়ার সংখ্যালঘু হিন্দুরা ১০০ গুণ বেশি অধিকার ভোগ করে।
এ নিয়ে সমালোচনার মুখে জাকির নায়েককে মালয়েশিয়া থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠলে ‘তাকে বহিষ্কারের আগে চীনা মালয়েশীয়দের (মালয়েশিয়া থেকে) বহিষ্কার করা উচিত’ বলে মন্তব্য করে ফের বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি। তবে এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমাও চান তিনি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বিবৃতিতে জাকির নায়েক বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায়কে আঘাত করা কখনই আমার উদ্দেশ্য ছিল না, এটি ইসলামের মূল তত্ত্বগুলোর পরিপন্থী এবং আমি এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে চাই।’
জাকির নায়েক ৯/১১-এর সন্ত্রাসবাদী হামলাকে ‘ভেতরের ব্যাপার’ বলে চিহ্নিত করে বিতর্কে জড়ান। এরপরেই তিন বছর আগে ভারত ছেড়ে পালিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ায় চলে যান, যেখানে তাকে পূর্ববর্তী সরকার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়।
গত বছরের জুলাই মাসে ভারত মালয়েশিয়ার কাছে জাকির নায়েকের প্রত্যার্পণের দাবি জানিয়ে অনুরোধ করে। তবে সেসময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেছিলেন যে ‘যতক্ষণ তিনি কোনো সমস্যা তৈরি না করছেন’ ততক্ষণ তাকে প্রত্যার্পণের কথা ভাববে না তার সরকার।
এদিকে জাকির নায়েকের উসকানিমূলক বক্তব্যে বেজায় চটেছে মালয়েশিয়ার সরকার। বাতিল হতে পারে তার সেখানে বসবাসের অনুমতিও।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেন, ‘এটি পুরোপুরি স্পষ্ট যে জাকির নায়েক জাতিগত রাজনীতিতে উসকানি দিচ্ছেন। কেউ (ধর্মীয়ভাবে) প্রচার করতেই পারেন, কিন্তু তিনি তা করছিলেন না। তিনি চীনাদের চীনে ফিরে যাওয়ার কথা এবং ভারতীয়দের ভারতে ফিরে যাওয়ার কথা বলে উসকানি দিচ্ছেন। আমার সরকার কখনও এ জাতীয় কথা বলেনি। এটা রাজনীতি হচ্ছে।’
মালয়েশিয়ার সরকার এর আগে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু এবার ওই মুসলিম ধর্ম প্রচারকের বিরুদ্ধে কড়া হচ্ছে সে দেশের সরকার।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ার ৩২ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে মুসলমানরা ৬০ শতাংশ। বাকি অংশটির মধ্যে বেশিরভাগই হয় চীনা নয়তো ভারতীয়, যাদের মধ্যে আবার বেশিরভাগই হিন্দু।