পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় ৫৫ জন শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের তৈরি একটি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই আশঙ্কায় ওই কোম্পানির তৈরি সিরাপ লোকেদেরকে ব্যবহার না করারও আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
ভারতের মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের তৈরি চারটি সিরাপ হলো-প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মেকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, ‘চারটি পণ্যের প্রতিটির নমুনার পরীক্ষাগার বিশ্লেষণ নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এতে দূষক হিসাবে অগ্রহণযোগ্য পরিমাণে ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে। এখন পর্যন্ত এই চারটি পণ্য গাম্বিয়াতে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে অন্য দেশ বা অঞ্চলে অনানুষ্ঠানিক বাজারের মাধ্যমে বিতরণ করা হতে পারে।’
এতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট জাতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দ্বারা বিশ্লেষণ না করা পর্যন্ত পণ্যের সমস্ত ব্যাচকে ‘অনিরাপদ বলে মনে করা উচিত।’
দৈনিক দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডব্লিউএইচও সিরাপ সম্পর্কে তার মেডিকেল পণ্য সতর্কবার্তায় উল্লেখ করেছে যে তারা তীব্র কিডনি আঘাত এবং ৬৬ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে।
পড়ুন: নাপা সিরাপে নয়, মায়ের পরকীয়ার জেরে সেই দুই শিশুর মৃত্যু
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্র বুধবার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের সর্বোচ্চ ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) গাম্বিয়ায় শিশুদের মৃত্যু সিরাপগুলো সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে বলে জানার পর একটি তদন্ত শুরু করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হরিয়ানার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে কোম্পানিটি গাম্বিয়াতে সিরাপ তৈরি এবং রপ্তানি করেছে। কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত পণ্যটি শুধুমাত্র গাম্বিয়ার কাছে বিক্রি করেছে।
অন্যান্য ভারতীয় সংবাদপত্র এবং টিভি স্টেশনগুলো জানিয়েছে, ডব্লিউএইচও এর মাধমে পরীক্ষা করা ২৩টি নমুনার মধ্যে চারটিতে ডায়থাইলিন গ্লাইকোল বা ইথিলিন গ্লাইকোল দ্বারা দূষিত পাওয়া গেছে।
ডাইথিলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল বিষাক্ত প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, প্রস্রাব করতে না পারা, মাথাব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন এবং কিডনির তীব্র আঘাত যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
ডব্লিউএইচও’র এই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, নিম্নমানের পণ্যগুলো অনিরাপদ এবং তাদের ব্যবহার, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, গুরুতর আঘাত বা মৃত্যু হতে পারে।
এতে আর বলা হয়, দেশগুলোকে নিম্নমানের পণ্য শনাক্ত এবং অপসারণের জন্য সরবরাহ চেইনের ওপর নজরদারি বাড়ানো উচিত।
পড়ুন: মহামারি শুরু হওয়ার পর করোনাভাইরাসে মৃত্যু সর্বনিম্ন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে সোমালিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মসূচি চালু