গত শুক্রবার আইনটি নিয়ে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে ২০ জন নিহত হন।
কর্তৃপক্ষ স্পর্শকাতর এলাকায় কয়েকশ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে এবং রাজ্যের ২১টি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে।
রাজ্যের একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, ‘কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে আমরা সাবধানতা অবলম্বন করছি।’
রাজ্যটিতে সহিংস অন্দোলনের জন্য সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে স্থানীয় সরকার ৪৯৮ জন ব্যক্তিকে নোটিশ দিয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ স্পর্শকাতর এলাকার পরিস্থিতি নজরে রাখতে ক্যামেরা সজ্জিত ড্রোন মোতায়েন করেছে।
রাজ্যে নিহতের সংখ্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষ কঠোর গোপনীয়তা রাখছে। তারা বলছে ১৫ জনের বেশি নিহত হয়নি। তবে, মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্থানীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি২৪ বলেছে, রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ এ।
রাজ্যের পুলিশ প্রধান বলেছেন, পুলিশ রাজ্যের কোথাও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ১ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৫ হাজারের অধিককে আটক করা হযেছে।
উত্তর প্রদেশে ২০ জন নিহত হওয়ার সাথে ভারতের বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে দেশজুড়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ জনে।
চলতি মাসের ১১ ডিসেম্বর ভারতের জাতীয় সংসদে আইনটি পাসের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কলকাতা এবং গুয়াহাটিসহ প্রায় সব রাজ্যেই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নয়াদিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এস রন্ধাওয়া গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে পুলিশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বাহিনীর কয়েকটি সংস্থা মোতায়েন করেছে। এছাড়া গুজব রোধ করতে পুলিশ সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোও পর্যবেক্ষণ করছে।’
গত সপ্তাহে দিল্লি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছিল।
ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হিন্দু ধর্ম, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, ফার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মের অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করেছে। তবে এটি মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্বের জন্য বৈষম্যমূলক বলে অনেকে বলে আসছে।
ভারতের বিরোধীদল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও এই আইনটিকে ভারতের সংবিধানে নীতির বিপরীত বলে সমালোচনা করেছে। তারা বলছে এটি মুসলমানদের বিতাড়িত করার একটা ষড়যন্ত্র ।