বসনিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার রাতভর বৃষ্টিপাত হয় ও প্রচন্ড ঝড় আঘাত হানে দেশটিতে।
বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে উদ্ধারকর্মীরা। রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় স্বেচ্ছাসেবক ও সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাবলানিকার স্থানীয় প্রশাসনের মুখপাত্র ডার্কো জুকান জানিয়েছেন, অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুকান হেলেজ এন১ আঞ্চলিক টেলিভিশনকে বলেছেন, সৈন্যদের সহায়তার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে এবং হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
হেলেজ বলেন, 'ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা নতুন আক্রান্তের খবর পাচ্ছি। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবাইকে পাঠিয়েছি। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হচ্ছে ভূমিধসের কারণে যেসব মানুষ জীবিত আছেন ও মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে তাদের উদ্ধার করা।’
জাবলানিকা ও কিসেলজাক শহরের উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, সারারাত বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল এবং সেলফোন সেবা বন্ধ ছিল। মোবাইল ফোন সিগন্যাল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জাবলানিকা ফায়ার স্টেশন জানিয়েছে, রাস্তা ও ট্রেনলাইন বন্ধ থাকায় শহরটি পুরোপুরি দুর্গম হয়ে পড়েছে।
প্রদেশের উদ্ধারকারী সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পুলিশ আমাদের জানিয়েছে রেলপথও অবরুদ্ধ করে হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে আপনি জাবলানিকার ভেতরে বা বের হতে পারবেন না। ল্যান্ডলাইন ফোন কাজ করছে, কিন্তু মোবাইল ফোনের কোনও নেটওয়ার্ক নেই।’
আরও পড়ুন: সিসিলি উপকূল থেকে ৬ ‘অভিবাসনপ্রত্যাশীর’ লাশ উদ্ধার
এই এলাকার জনগণকে প্লাবিত রাস্তায় বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বসনিয়ার গণমাধ্যমে প্রচারিত ড্রোনের সাহায্যে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেছে গ্রাম ও শহরগুলো পুরোপুরি পানির নিচে ডুবেছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে কাদা ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাটের খারাপ অবস্থা দেখা গেছে।
দেশটির নাগরিক সুরক্ষা পরিষেবা বলছে, ‘ব্যাপক পানি ও ভূমিধসের কারণে বহু মানুষ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ভুক্তভোগী এবং অনেক আহত ও নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে।’
কর্তৃপক্ষ লোকজনকে উপরের তলায় থাকার আহ্বান জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ভবনগুলোর নিচতলায় পানি দ্রুত ভরে যাওয়ায় গৃহপালিত পশু ও গাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।
তুমুল বাতাসের কারণে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের দক্ষিণ উপকূলে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ক্রোয়েশিয়ার বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম হুমকিতে পড়েছে।
বসনিয়ার দক্ষিণে মন্টেনিগ্রোতেও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে কিছু গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্পেন যাওয়ার পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবি, নিহত ৯, নিখোঁজ ৪৮