জাতিসংঘে বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণে চলমান সাধারণ অধিবেশনের এক ফাঁকে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
মহাসচিব বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের নতুন ক্ষেত্র সাইবার সন্ত্রাস, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ও ওয়েবে একযোগে আক্রমণে করে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ায় ও নতুন অনুসরণকারী তৈরি করে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নজিরবিহীন সন্ত্রাসবাদের হুমকির প্রতিক্রিয়া হিসেবে ‘প্রতিরোধের প্রচেষ্টাগুলোর সাথে সুরক্ষা ব্যবস্থার পরিপূরক হতে হবে, যা সর্বদা মানবাধিকারকে সম্মান করে এবং মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে এবং মোকাবিলা করতে পারে।’
চলতি মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা রাশিয়া সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরেশিয়ার তিনটি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করে।
ইউরেশিয়ার তিন সংস্থা হলো- সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, সম্মিলিত নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থা এবং স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর কমনওয়েলথ।
সন্ত্রাসবাদ কার্যক্রমের পাল্টা প্রতিরোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা জোটের মতকে প্রতিধ্বনিত করা মহাসচিব মানবাধিকারকে সম্মান দেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
মার্কিন ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর জোনাথন কোহেন বলেন, মানবাধিকারকে সম্মান না করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রচেষ্টা চূড়ান্তভাবে বিরক্তিকর ও সহিংস উগ্রবাদকে লালন করবে।
‘সদস্য দেশ বা আঞ্চলিক সংস্থাগুলো যখন অহিংস রাজনৈতিক মতবিরোধের সাথে সন্ত্রাসবাদের মুখোমুখি হয়, তারা কেবল মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই নয়, সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করার বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টাকেও বিদ্রুপ করে,’ যোগ করেন তিনি।
রাশিয়ার দিকে আঙ্গুল তুলে জোনাথন বলেন, সিরিয়াতে বিশ্ব এ ‘বিপজ্জনক দৃষ্টিভঙ্গি’ প্রত্যক্ষ করছে। যেখানে সরকার এবং তার মিত্র রাশিয়া ‘বেসামরিক নাগরিক, স্কুল, অ্যাম্বুলেন্স এবং হাসপাতালে হামলা করে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের বৈধতা প্রমাণ করতে গিয়ে গত এপ্রিল থেকে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং দুই হাজারের বেশি মানুষকে আহত করেছে ।’
বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় হুমকি চীনকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সব দেশের মতো প্রকৃত সন্ত্রাসীদের লড়াইয়ের অধিকার চীনেরও রয়েছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের প্রতিরোধ হিসেবে চীন মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর (ইউঘুর) শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় অনুশীলনকে দমন করার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে, এটা করতে পারে না।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদের হুমকি আসছে সিরিয়া ও ইরাক থেকে। যা খুব দ্রুত আফ্রিকা ও লিবিয়াসহ এশিয়ার কেন্দ্রীয় দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে।
পাশ্চাত্য সমালোচনার ইঙ্গিত দিয়ে রুশ মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু দেশ আজ দ্বৈত-ভূমিকা পালন করছে। তাদের কারণেই আজ সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।’