রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও গণতন্ত্রপন্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক। রবিবার দেশটির একটি জাতীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবদাল্লাহ হামদক নিজেই।
হামদক জাতিসংঘের একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা, তাকে সুদানের অন্তর্বতীকালীন সরকারের বেসামরিক মুখ হিসাবে ভাবা হয়েছিল। গত অক্টোবরে সুদানের সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা পুরোপুরি নিজেদের দখলে নেয়। সেসময় তারা প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদককে গৃহবন্দী করে, গ্রেপ্তার করে তার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীকে। পরবর্তীতে সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয়াদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির পর তাকে পুনর্বহাল করা হয়।
তবে হামদকের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি অনেকে। এরপর দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা সামরিক বাহিনীকে বিশ্বাস করে না।
রবিবার টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে হামদক বলেন, সুদানের পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে, যা দেশের সমগ্র অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ১২
তিনি বলেন, তার পদত্যাগ অন্য একজনকে জাতির নেতৃত্ব দেয়ার এবং একটি ‘বেসামরিক, গণতান্ত্রিক দেশে গঠণের’ সুযোগ দেবে। তবে এসময় হামদক তার কোনো উত্তরসূরির নাম বলেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধান পূরণ ও বিরোধ নিষ্পত্তিতে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
ভাষণে হামদক আরও বলেন, তিনি দেশটিকে ‘বিপর্যয়ের দিকে চলে যাওয়া’ থেকে থামানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যা করা হয়েছে তা সত্ত্বেও ...এটি ঘটেনি।’
২০১৯ সালের অক্টোবরে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী দেশটিরে ক্ষমতাসীন দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক ওমর আল-বশির এবং তার ইসলামপন্থী সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করে। আল-বশিরের ক্ষমতাচ্যুতির চার মাস পরে জেনারেল ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ২০২৩ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ শাসন করার জন্য একটি ক্ষমতা ভাগাভাগি চুক্তি হয়।
নভেম্বরে হামদকের সঙ্গে সমঝোতার অধীনে, পুনর্বহাল হওয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত টেকনোক্র্যাটদের একটি মন্ত্রিসভার নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল। তবে নতুন বেসামরিক সরকারের কতটা ক্ষমতা থাকবে তা স্পষ্ট করা হয়নি তখন।
ভাষণে হামদক বলেন, আমি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আমার দেশের মানুষের সেবা করার সম্মান পেয়েছি। এসময়কালে আমি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফল হয়েছি, আবার কখনও কখনও ব্যর্থ হয়েছি।
আরও পড়ুন: গণহত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে ফিরে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কূলে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী