সূত্র জানায়, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের বিকাশ, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের এমক্যাশ, ইউ-ক্যাশ এবং আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের ইসলামিক ওয়ালেট- এ চারটি এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার আন্তলেনদেন সেবা চালু করবে এবং ধীরে ধীরে অন্যরা এতে যোগ দেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ থেকে ২২ অক্টোবর জারি করা নির্দেশনা অনুসারে, এমএফএস সেবাদাতা ও ব্যাংকগুলোকে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে আন্তলেনদেন সুবিধা চালু করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, আন্তলেনদেন ব্যবস্থার মাধ্যমে এমএফএস হিসাবধারীরা কয়েকটি ব্যাংককে ‘সরাসরি আর্থিক লেনদেন’ করতে পারবেন।
ব্যাংকিং খাতের এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এ ধরনের প্রক্রিয়া একবার পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে যেকোনো এমএফএস হিসাবধারী বা ব্যাংক হিসাবধারীরা একে অপরের অ্যাকাউন্টে অর্থ স্থানান্তর করতে পারবেন।’
দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে এ সেবা চালু করতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত।’
ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ২০ ব্যাংকের সাথে এ জাতীয় আন্তলেনদেন সুবিধা চালু করেছি।’
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নগদ লেনদেন কমানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পারস্পরিক লেনদেনের জন্য কোম্পানিগুলো ব্যাংক ও এমএফএস গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যমান লেনদেন ফির অতিরিক্ত কোনো মাশুল নিতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, গ্রাহকদের জন্য শুধুমাত্র বিদ্যমান চার্জগুলো প্রযোজ্য হবে। এমএফএস এবং ব্যাংকগুলো প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত নির্দিষ্ট হারে ফি নিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক এমএফএস সেবাদাতার হিসাব থেকে অন্য এমএফএস সেবাদাতার (পি-টু-পি) হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রাপক এমএফএস সেবাদাতা প্রেরক এমএফএস সেবাদাতাকে সাকুল্যে লেনদেন করা অর্থের শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ ফি দেবে।
ব্যাংক হিসাব থেকে এমএফএস হিসাবে এবং এমএফএস হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তর উভয় ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট এমএফএস সেবাদাতা সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সাকুল্যে লেনদেন করা অর্থের শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ দেবে, ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বর্তমানে দেশে ১৬টি এমএফএস সেবা চালু আছে। জনগণের মধ্যে মোবাইল আর্থিক সেবা সরবরাহ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশে নয় কোটি ২৯ লাখ এমএফএসের গ্রাহক রয়েছে। আর সারা দেশে ১০ লাখ এজেন্ট ছাড়িয়ে আছে।
গত আগস্ট মাসে এমএফএসের মাধ্যমে ৪১ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এবং ১০৪ কোটি টাকা প্রবাসী আয় বিতরণ করা হয়েছে। এ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা হিসেবে ১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সাথে এ মাধ্যম ব্যবহার করে ১ হাজার ৬০ কোটি টাকার কেনাকাটা হয়েছে। গ্যাস-বিদ্যুতের গ্রাহকরা পরিষেবা বিল হিসেবে ৯০৮ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করেছেন।
বর্তমানে মোবাইলে টিকিট কেনা, হোটেল বুকিং ও মোবাইল ফোন রিচার্জিংসহ অনলাইনে বিভিন্ন অর্থ প্রদানের জন্য মোবাইল আর্থিক সেবার ব্যবহার হচ্ছে বলে এমএফএস শিল্পের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।