যুক্তরাজ্যের ক্রমবর্ধমান বাজার ধরতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই ও যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) এফবিসিসিআইয়ের হেড অব পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশনস তানজিদ বসুনিয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চায়না প্লাস ওয়ানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যের ভোক্তা মার্কেট ধরতে রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণের উপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষ।
রবিবার রাতে যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন ও দেশটিতে সফররত এফবিসিসিআই প্রতিনিধি দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ডায়ালগে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। এসময় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: অবরোধ অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভয় পায়: এফবিসিসিআই সভাপতি
রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণের উপর জোর দিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমরা শুধু তৈরি পোশাক খাতে নির্ভরশীল হয়ে আছি। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের বিকল্প নেই। পোশাক শিল্পের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে আরও কী ধরনের পণ্য রপ্তানি করা যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করছি আমরা।’
এসময় তৈরি পোশাকের বাইরে কৃষিজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, ফুল ও ফল রপ্তানিতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আসার বিষয়েও বাংলাদেশি হাইকমিশনের সহযোগিতা চান এফবিসিসিআই সভাপতি।
পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: এনবিআরকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান এফবিসিসিআই’র
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি হাইকমিশনার সাইদা তাসনিম মুনা বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশন ও বেসরকারি খাতের উদ্যোগে গত বছর যুক্তরাজ্যে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির দিক থেকে সর্বোচ্চ। এই রপ্তানির ৯১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
এ ছাড়াও টেক্সটাইল, মৎস্য, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হলেও সেই সংখ্যা খুব কম। চায়না প্লাস ওয়ান নীতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় কৃষিজাত পণ্য ও আনারসসহ বিভিন্ন ফল রপ্তানির উপর জোর দেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
বাংলাদেশের তৈরি পণ্য মূলধারার বাজারে আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মূলধারার বাজারে কী ধরনের পণ্য আসছে এবং সেসব পণ্যের উৎস কোথায়, কী ধরনের চাহিদা রয়েছে সেগুলো বিশ্লেষণ করতে পারি, তাহলে সেটি দেশের রপ্তানি বাড়াতে সাহায্য করবে।’
বৈঠকে প্রশিক্ষিত নার্সসহ দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি নিয়েও আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে ব্যবাসায়ী নেতারা ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাটের সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে এফবিসিসিআই: মাহবুবুল আলম