সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ১৩ মাসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছে।
রবিবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
এতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কৃষিপণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, বাইসাইকেল ও আসবাবপত্রের রপ্তানি কমেছে।
ইপিবি’র প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশ গত মাসে (সেপ্টেম্বর) তিন দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ ৫ বছর করার দাবি বিজিএমইএ’র
যাইহোক, চলতি অর্থবছর ২০২২-২০২৩ এর প্রথম তিন মাসে সামগ্রিকভাবে রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে এবং ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ১২ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে যার মূল্য ছিল ১১ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার।
মূলত পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ায় গতমাসে সামগ্রিক রপ্তানি কমেছে। আগের মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে তিন দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারের। যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় সাত দশমিক ৫২ শতাংশ কম। গত মাসে বোনা ও নিট উভয় পোশাকের রপ্তানি কমেছে।
তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পোশাক রপ্তানিতে ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউভুক্ত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানকার মানুষ গাড়ি এবং মুদির জন্য জ্বালানি ছাড়া অন্য সব কেনাকাটা বন্ধ করে দিয়েছে।
সে কারণে বিদেশি ক্রেতারা দুই থেকে তিন মাস কম অর্ডার দিচ্ছেন। অনেক কোম্পানি ক্রয় আদেশের পণ্য প্রস্তুত হওয়ার পরও চালানের অনুমতি দিচ্ছে না বলে জানান তারা।
বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল রবিবার বলেছেন যে বিজিএমইএ ইতোমধ্যে সেপ্টেম্বর থেকে প্রবৃদ্ধি মন্দার প্রাথমিক ইঙ্গিত শেয়ার করেছে, যা সেপ্টেম্বরের রপ্তানি ডেটাতে স্পষ্টতই প্রতিফলিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী খুচরা বাজার কোভিড-পরবর্তী কনটেইনার ফ্রেইট এবং সাপ্লাই চেইন সংকট, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি এবং তারপরে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রত্যাশিত মন্দা থেকে শুরু করে অনেক চ্যালেঞ্জের দ্বারা ব্যাহত হয়েছে, যা খুচরা বিক্রয় এবং পোশাকের চাহিদাকে স্থগিত করছে।
রুবেল বলেন, ক্রেতারা তাদের ইনভেন্টরি এবং সাপ্লাই চেইনকে সর্বোত্তম করার জন্য সতর্ক পদক্ষেপ অনুসরণ করছে, তাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ এমনকি উৎপাদন ও অর্ডার আটকে রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে এটি বেশ নরম এবং দুর্বল পরিস্থিতি হয়েছে, যেখানে আমাদের স্থায়িত্ব এবং প্রতিযোগিতামূলক অগ্রগতির কারণে আমাদের বেড়ে ওঠার সমস্ত শক্তি এবং সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ২০২২ সালের শেষ সময়ের জন্য আশানুরূপ কিছু অনুমান করা কঠিন করে তোলে’।
আরও পড়ুন: বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ