গত বছরের শেষ প্রান্তিক থেকে চলতি বছরের শুরুতে প্রায় ছয় মাস পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম দেখা গেছে। ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় দাম ছিল আকাশ ছোঁয়। পরে চীন, তুরস্ক, মিশর, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেও দামের নাগাল টেনে ধরা যায়নি।
গতবারের এমন পরিস্থিতিতে পড়ায় এবার আগেভাগেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় রেলপথই হয়ে ওঠে মূল ভরসা। গত ১৩ মে পেঁয়াজের প্রথম চালানটি রেলযোগে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে।
বাংলাদেশের আমদানিকারকরা ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত এলাকা মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চল থেকে থেকেই পেঁয়াজ আনেন।
সোমবার ১,৬০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজের বড় একটি চালান রেলযোগে দর্শনা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে। যশোরের আমদানিকারক ‘মেসার্স আহাদ আয়রন স্টোর’ মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে এ চালানটি এনেছেন।
আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী এজাজ উদ্দিন টিপু জানিয়েছেন, পেঁয়াজ আনার জন্য গত মাসের ১৯ তারিখে তিনি এলসি খোলেন। ৪১টি ওয়াগনভর্তি ট্রেনটি মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের গেদে এসে পৌঁছায় গত রবিবার। আজ সোমবার বাংলাদেশের ইঞ্জিন গিয়ে ট্রেনটি দর্শনা স্টেশনে আনার পর পেঁয়াজ আনলোড করা হচ্ছে।
টিপু জানান, স্বাদ ও ঝাঁঝ আমাদের দেশি জাতের মতো হওয়ায় মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলে উৎপাদিত সবচেয়ে ভালো জাতের পেঁয়াজ গোল্টি ও গোল্টা জাতের পেঁয়াজই আমদানি করেছেন।
বাংলাদেশে বাইরে থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ সচরাচর বড় আকারের হয়। কম দামি এই পেঁয়াজ মূলত রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত হয়। বাসাবাড়িতে রান্নার জন্য ঝাঁঝযুক্ত ছোট আকারের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। বাংলাদেশের বাজারে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজের সংকট নেই।
যশোরের আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী স্বপন সাহা জানান, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম এখনো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ২২ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
আমদানিকারক টিপু বলেন, তার পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম আরও কমবে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের গাঁটের পয়সা বাঁচবে। আর দেশি স্বাদ ও ঝাঁঝের হওয়ায় রান্না করা খাবারের স্বাদ কমবে না মোটেই।
আমদানি করা এ পেঁয়াজ আজ-কালের মধ্যেই দর্শনার গুদাম থেকে পাইকাররা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট যমুনা ট্রেডিং করপোরেশনের সত্বাধিকারী এনামুল হক।