পরীমণি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এটি খুব ভালো কথা, সবার পাওয়া উচিত। যারা তার সাথে জড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে তাদেরও পাওয়া উচিত। তিনি বের হলেন বিজয়ীর বেশে, মাথায় পাগড়ি, হাস্যমুখে। খুব সুন্দর লাগছিল তাকে। মুক্তি পাওয়ার পর উৎসুক জনতার উদ্দেশ্যে উৎফুল্ল পরীমণি হাত উঁচিয়ে অভিনন্দন গ্রহণ করছিলেন। এই সময় অনেকেরই চোখ ছিল তার হাতের দিকে। তার হাতে লেখা ছিল, ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।
এ লেখা দেখে পরিমণি আর তার উপদেষ্টাদের বুদ্ধি নিয়ে আমার সন্দেহ জাগছে। একটু বোঝা উচিত ছিল এতে অনেকেই ক্ষুণ্ন হতে পারেন। বিশেষ করে যাদের কারণে তিনি জেলে ছিলেন। তারা ক্ষমতার দ্বন্দ্বে হেরে গিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন, এটা যদি কেউ ভেবে থাকেন তবে তার জন্য বিপদ আছে।
‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’ কথাটি একটি গান থেকে নেয়া এবং এটি হয়তো তার প্রিয় গান হতে পারে। গানটিতে মূলত রাগ ও ঘৃণা প্রকাশ করার জন্য গালিগালাজ করা হয়েছে। তবে যথেষ্ট উত্তেজক ভাষায় লেখা এই গান আজকের দিনে তাকে প্রিয় করে তুলবে না অনেকের কাছে! বিষয়টা বোঝা কঠিন নয়, যদিও বোঝা যায় যে এই বিজয়কে সে নিজের ব্যক্তিগত বিজয় মনে করছে। এটি যে মধ্যবিত্ত শ্রেণির এক ধরণের লড়াই ছিল ‘ক্লাব’ শ্রেণির বিরুদ্ধে সেটা তার মাথায় ঢুকেনি। কিন্তু কেউ ভুলবে না যে ‘ক্লাব’ শ্রেণি কত ক্ষমতাবান এবং চাইলে তারা পরীমণিকে আরও বহুদিন আটকে রাখতে পারতো। এরকম বহু কেস আছে। করেনি, কারণ একে নিয়ে তারা আর সময় নষ্ট করতে চায় না।
আরও যুদ্ধ আছে। যারা তার বিপক্ষে তারা এখনও সমান ক্ষমতাবান। পরীমণি বোট ক্লাবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভেবেছিল ‘জিতেছি’। কিন্তু তার সূত্র ধরে বাড়িতে রেইড, জেল, রিমান্ড ইত্যাদি। তারা ক্ষমতা রাখে, সে রাখে না। পুলিশের বাড়াবাড়ি তার বড় উপকারে এসেছে, কিন্তু খেলা শেষ হয়নি। মামলা ডিসমিস হয়নি। হাতে ওই কথা লিখে বিজয় নিশান না উড়িয়ে তিনি চলে গেলেই পারতেন। তার বোঝা উচিত, এক মাঘে ক্ষমতাহীনদের শীত যায় না। এই মেয়ে বোকা, কার সাথে লড়তে হয় এবং কীভাবে লড়তে হয় জানে না।
আফসান চৌধুরী: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
আরও পড়ুন: পরীমণি আর পাবলিকের জামিন হলো, অন্যদের কী হবে