আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ রেখে হাজার হাজার পদ্মা সেতু নির্মাণ করেও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘আপনার (সরকার) প্রতি জনগণের কতটা আস্থা আছে তা দেখার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করুন। আইয়ুব খান পাকিস্তান আমলেও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছিলেন। গণতন্ত্র ও জনগণের রাজনৈতিক মুক্তি না থাকলে হাজার হাজার পদ্মা সেতু নির্মাণের কোনো মানে হয় না। যদি তাদের ভোট এবং অন্যান্য অধিকার না থাকে।’
মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি আস্থা থাকায় জনগণ বারবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিচ্ছে বলে মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনের আগের দিন রাতে ভোট কারচুপি করে এবং জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে সরকার কীভাবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে?
আগামী নির্বাচনে তাদের দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে এই বিএনপি নেতা বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
‘বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকার আবশ্যক। অন্যথায়, স্বর্গ থেকে নির্বাচন কমিশনার আনলেও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না। এটা অসম্ভব,’ বলেন তিনি।
এই সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা ফখরুল তাদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ফলাফল তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: সরকারের অবহেলায় দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে: বিএনপি
তিনি বলেন, তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মনে হয় সরকার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ‘এটি মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে পারেনি। বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসনে সরকারের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই।
বিএনপি নেতা বলেন, বৈঠকে দুর্গত মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও ঘর নির্মাণ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়।
তিনি বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী নিজেই সারাদেশে ৬ষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহায়ন শুমারি সঠিকভাবে হয়নি বলে স্বীকার করায় তাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
‘বর্তমান সরকারের আমলে সব ধরনের জরিপ ও গবেষণার মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়… ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সব তথ্য-উপাত্তের ওপর আস্থা রাখতে পারে না।
তিনি বলেন, তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেয়া নেতারা মনে করেন, সরকার বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ‘তারা মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে পারেনি। বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসনে সরকারের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই’।
বিএনপি নেতা বলেন, বৈঠকে দুর্গত মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও ঘর নির্মাণ নিশ্চিত করতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ভোট চুরি করে আবারও ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না: আবদুল আউয়াল
তিনি বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী নিজেই সারাদেশে ৬ষ্ঠ জনসংখ্যা ও গৃহায়ন শুমারি সঠিকভাবে হয়নি বলে স্বীকার করায় তাদের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বর্তমান সরকারের আমলে সব ধরনের জরিপ ও গবেষণার মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়… ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সব তথ্য-উপাত্তের ওপর আস্থা রাখতে পারে না।
হঠাৎ করে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সারাদেশে মানুষ ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছে। ‘ঘন ঘন বিদ্যুত কেটে যাওয়া প্রমাণ করেছে যে শতভাগ বিদ্যুতের কভারেজের বিষয়ে সরকারের মন্তব্যগুলি কেবল বাগাড়ম্বর।
তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে নিজেদের পকেট ভারী করার মূল লক্ষ্য নিয়ে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া বাংলাদেশ একটি ভঙ্গুর অবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষণ।
ফখরুল বলেন, তাদের বৈঠকে দেখা গেছে যে প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৪.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে। কারণ রিজার্ভ থেকে সাডে ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) নামে সরকারের উচ্চপদস্থ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে।
তারা বলেছে যে এগুলি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলির দেয়া বাধ্যতামূলক ঋণ এবং আইএমএফ এই পরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অন্তর্ভুক্ত না করার পরামর্শ দিয়েছে।
বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, এই সাড়ে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই।
সরকার শুধু নিজের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালীদের স্বার্থে অর্থনীতির সব নিয়ম-কানুন লঙ্ঘন করে দেশের এই ভয়াবহ ক্ষতি করছে।
তিনি বলেন, প্রভাবশালীরা ইডিএফ ঋণের নামে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ‘অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন যে এই ধরনের ঋণের সুদূরপ্রসারী প্রভাব সামাজিক অর্থনীতি এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে দেবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের বৈঠকে ইডিএফ ঋণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যসহ একটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।