দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তারা ভারত থেকে যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক আসেন তাহলে গ্রহণ করবেন এবং যারা আমাদের নাগরিক নন তাদের ফেরত পাঠাবেন। তার মানে হলো তারা (সরকার) স্বীকার করে নিয়েছে যে পুশ-ইন হচ্ছে।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘তারা (সরকার) আমাদের দেশকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানাতে (ভারতকে) সহযোগিতা করছে।’
ফখরুল অভিযোগ করেন যে ২০০২ সালে নারী নির্যাতনে বিএনপিকে জড়িয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবীশ কুমারের বক্তব্যকে সমর্থন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ‘আমরা ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। ‘তিনি (কাদের) সংখ্যালঘু নিপীড়ন প্রসঙ্গে অমিত শাহের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সমগ্র জাতিকে স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ করেছেন।’
‘আমরা দ্ব্যর্থহীন এবং অত্যন্ত সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে ওবায়দুল কাদের, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবীশ কুমার বাংলাদেশ, বিএনপি ও খালেদা জিয়ার সরকার সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছেন তা সর্বৈব মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বৈষম্যমূলক, ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টিকারী এবং দুদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে (আওয়ামী লীগ ও বিজেপির) সংকীর্ণ সুবিধা লাভের ঘৃণ্য কৌশলমাত্র,’ যোগ করেন তিনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদেরকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনি ও আপনার দেশের স্বার্থবিরোধী অবৈধ সরকার অমিত শাহের বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে সুস্পষ্টভাবে শুধু এ দেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেননি, একই সাথে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও এনআরসির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সব নিরীহ সাধারণ ভারতীয় মানুষের স্বার্থহানিকর ঘৃণ্য সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।’
তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেশের স্বার্থবিরোধী যেকোনো বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের ‘ভারত তোষণনীতির’ অংশ হিসেবে কাদের বিএনপিকে নিয়ে সাম্প্রতিক বক্তব্য দিয়েছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংখ্যালঘু নির্যাতনের দোষ বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেশপ্রেম বিবর্জিত প্রতিহিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।
‘ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য কোনো বিচারেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ বা সমর্থন করতে পারে না। বস্তুত অমিত শাহের দেয়া বিএনপি ও বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন করে ওবায়দুল কাদের ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবীশ কুমারের বর্ধিত দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র,’ বলেন তিনি।