বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব-উল আলম হানিফের বিপরীতধর্মী মন্তব্য এটাই প্রকাশ করছে যে, তারা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিত্সা ও প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে নিষ্ঠুর তামাশা করছে।’
যেসব কারণে প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করা যায়, খালেদা জিয়া তার কোনোটিতেই পড়েন না বলে হানিফের বক্তব্যের একদিন পরই তিনি এ মন্তব্য করলেন।
এর আগে শনিবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে নৌ থানা ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে আবেদন করলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে।’
রিজভী বলেন, চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পরিহার করে সরকারকে অবশ্যই তার নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, ‘মনে রাখবেন, এক মাঘে শীত যায় না। আপনাদের বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসে উঠছে। সুতরাং ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। খালেদা জিয়ার মুক্তিতে কোনো বাধা সৃষ্টি করবেন না।’
দুর্নীতির একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
অসুস্থতার কারণে গত ১ এপ্রিল তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, যথাযথ চিকিৎসা না দেয়ায় বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে না হয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চান অভিযোগ করে তিনি বলেন, খালেদার চিকিৎসা ও জামিনে বাধা দিতে সরকার ভয়ঙ্কর নীলনকশা করছে।
জামিন পাওয়া তার সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, আদালতের ওপর সরকারের প্রভাবের কারণে খালেদা জিয়া জামিন বঞ্চিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খালেদা জিয়ার জামিনে বড় বাধা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
বিএনপির কারও বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা মামলা করা হয়নি বলে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সত্য বলতে ভুলে গেছেন। তিনি অনবরত মিথ্যা বলে যাচ্ছেন।’
তিনি দাবি করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গত ১০ বছরে সারাদেশে ১ লাখের বেশি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ২৫ লাখেরও বেশি।