বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সরকার নিরপরাধ মানুষকে তুলে নিয়ে তাদের জঙ্গি হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা কয়েকদিন আগে দেখেছেন যে গভীন জঙ্গল উল্লেখ করা একটি এলাকা থেকে কিছু সাধারণ ও নিরপরাধ মানুষকে জঙ্গি বলে তুলে নিয়ে আসা হয়।’
মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও ধর্মান্ধ আছে তা দেখানোর জন্যই সরকার এটা করেছে। আর জঙ্গিদের দমন করতে শুধু তাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগ জঙ্গি, তারা সাধারণ মানুষকে হত্যা ও ধ্বংস করছে এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের তকমা চাপিয়ে দিয়ে তাদের সব অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সাজানো নাটক: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ… এটা কোন পাপ বা অপরাধ নয়। সরকার ধর্ম পালনকারীদের জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।’
জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রতিষ্ঠাতা কাজী জাফর আহমেদের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে এবং সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে এক ব্যক্তি ও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের জাতির অস্তিত্ব এখন নির্ভর করছে আমরা ফ্যাসিবাদকে সরাতে পারি কি না তার ওপর।
তিনি বলেন, এটা উৎসাহব্যঞ্জক যে জনগণ বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে ও জেগে উঠছে এবং এক বছরে ২২ জন মানুষ সড়কে জীবন উৎসর্গ করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে অবশ্যই ফ্যাসিবাদীদের দমন করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার একটি বাসা থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৬ নেতাকে তুলে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা পর ৩টি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার সাজানো নাটক: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মনে হয় ২০/২৫ বছর ধরে ওই অস্ত্রগুলো মাটির নিচে লুকিয়ে ছিল এবং সেখান থেকে সেদিন আনা হয়েছিল। এই মিথ্যা প্রচারণা মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা। তারা মনে করে সব দেশের মানুষ বোকা, কিন্তু সবাই বোঝে যে তারা (সরকার) এভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জিয়া পরিবারকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা দখলকারী প্রধানমন্ত্রী জিয়াউর রহমানের পরিবারকে খুনি বলে অভিহিত করেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল এখন কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন এবং দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে এবং সংসদ ভেঙে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।